
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বগুড়ার এক গণসমাবেশে বলেছেন, গত জুলাই-আগস্টসহ বিগত পনেরো বছরে আওয়ামী লীগের অপরাধের ব্যাপকতা ও মাত্রা এত বেশি যে, তাদেরকে আর রাজনৈতিক দল বলা যায় না। এটি বরং ভয়ংকর অপরাধীদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তাই এদের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না। তাদের রাজনীতি করার অর্থ হলো, একটি অপরাধীচক্রকে আবারও নির্মমতা চালানোর সুযোগ করে দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, ইসলামবিরোধী নারী নীতিমালা বাতিল, শাপলা ও জুলাই মাসের হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, দুর্নীতিবাজদের বিচার এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। ইসলামী হুকুমত কায়েমের লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে ঐতিহাসিক সাতমাথার মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত এক বিশাল গণসমাবেশে এসব কথা বলেন পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা আ. ন. ম মামুনুর রশীদ।
নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, এই প্রস্তাব কুরআন-হাদীস ও এ দেশের মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যৌনকর্মে নিপীড়িত নারীদের রক্ষার পরিবর্তে, প্রস্তাবে তাদের ওপর চলমান নির্মমতাকে 'শ্রম' হিসেবে আখ্যায়িত করে নারীকে এক বিভৎস চক্রে আটকে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যেসব কমিশন এ ধরনের প্রস্তাব করে, তাদের কমিশন বাতিল করতে হবে।
মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আমাদের সন্দিহান করে তুলেছে, কারণ জাতিসংঘ আজ পর্যন্ত ১৩ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা চালাচ্ছে, জাতিসংঘ কেবল কাগুজে বিবৃতি দিয়েছে—কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি বলেন, মোদি সরকার ভারতে মুসলমান, মাদরাসা ও মসজিদের ওপর যে নিপীড়ন চালাচ্ছে, তা বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা দিয়ে প্রশ্রয় পাচ্ছে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সংস্কার ও নির্বাচন—দুটিই জরুরি। তবে মৌলিক সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন দেশের জন্য কল্যাণকর বা অর্থবহ হতে পারে না।