
অবশেষে সাংবাদিক সমাজের চলমান আন্দোলনের মুখে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেলের বদলির প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার (৫ মে ২০২৫ খ্রি.) তারিখের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে তালা উপজেলা থেকে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেলকে রংপুর বিভাগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ন্যস্ত করা হলো।’
এদিকে এই প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই সাংবাদিক সমাজের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। তারা সরকারকে কৃতজ্ঞতাও জানান।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের ৯ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধানে গেলে সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুর সঙ্গে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলমের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ইউএনও শেখ মো. রাসেল ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত সাংবাদিককে ১৭৬ ধারায় ১০ দিনের কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালা ও সারা দেশের সাংবাদিক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
তবে বিষয়টিকে আড়াল করতে ইউএনওর পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু ঠিকাদার ও রাজনৈতিক কর্মী মানববন্ধন করে তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেন।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও অফিস ফেলে মানববন্ধনে অংশ নেন, যা জনসাধারণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।
তবে সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। জাতীয় ও আঞ্চলিক প্রায় সব প্রথম সারির গণমাধ্যমে ইউএনওর পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত, দুর্নীতি ও সাংবাদিক নিপীড়নের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। শেষ পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেই অভিযোগ ও বিতর্কের প্রেক্ষিতে ইউএনও রাসেলকে তালা থেকে প্রত্যাহার করে বদলি করল রংপুরে।
সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা বলছেন, সাংবাদিক সমাজের ঐক্য এবং গণমাধ্যমের সোচ্চার ভূমিকার কারণেই এই বদলি অনিবার্য হয়ে উঠেছে।