
গ্যাসের তীব্র সঙ্কটে দেশ। প্রতি মাসে নিয়মিত বিল পরিশোধ করেও গ্যাস না পাওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। কলকারখানায় গ্যাসের চাহিদামতো সরবরাহ না পাওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে। ফলে গ্যাস নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ-অস্থিরতা বাড়ছে। রাজধানী ঢাকার আবাসিক খাতের অনেক গ্রাহক গ্যাসের দাবিতে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের দাবি সরকার পরিকল্পিতভাবে রেশনিং করে গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ করতে পারত। কোন এলাকায় কখন গ্যাস থাকবে আর কোন এলাকায় গ্যাস থাকবে না সেটি গ্রাহকদের নিয়মিত জানানো হলে তারা সেভাবেই কারখানায় উৎপাদন ও আবাসিক গ্রাহকরা রান্নাবান্না করতে পারতেন। কিন্তু রেশনিং করে গ্যাস সরবরাহের তথ্য প্রচার করলেও গ্রাহকরা অন্ধকারে। রাজধানী ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা জানান, তারা নিয়মিত বিল পরিশোধ করে গ্যাস না পাওয়ায় রাস্তায় নামার চিন্তাভাবনা করছেন। ঢাকা ও ঢাকার আশপাশে আবাসিকসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে গ্যাস সরবরাহ করে থাকে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। মতিঝিল, মিরপুর ও গুলশানÑ এই তিন অঞ্চলে কোম্পানির রয়েছে জরুরি তিনটি গ্যাস নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র। তাদের কাছে আবাসিক গ্যাস সঙ্কটের বিষয়ে প্রতিদিন অসংখ্য অভিযোগ আসছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই।
খবর নিয়ে জানা গেছে, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, মাতুয়াইল, জুরাইন, রামপুরা, সিদ্ধেশ্বরী, বনশ্রী, বাড্ডা, তেজগাঁও, তেজকুনিপাড়া, মগবাজার, মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা, নাখালপাড়া, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মালিবাগ, খিলগাঁও, কমলাপুর, গোলাপবাগ, গোপীবাগ, মানিকনগর, ওয়ারী, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ রাজধানীর বহু জায়গায় গ্যাসের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গ্রাহকরা প্রতি মাসে গ্যাসের বিল পরিশোধ করেন কিন্তু গ্যাস পান না। যাত্রাবাড়ী ও শনির আখড়ার গ্রাহকদের অনেকেই জানিয়েছেন, তারা গ্যাসের দাবিতে যেকোনো সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গ্রাহক জানান, অন্তর্বর্তী সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে সে জন্য এতদিন গ্রাস না পেয়েও বিল পরিশোধ করেছি। এখন পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় নেই।
জানা গেছে, দেশে গ্যাসের উৎপাদন টানা কমছে। আমদানি করেও চাহিদামতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তাই রেশনিং করে (এক খাতে কমিয়ে, আরেক খাতে বাড়ানো) পরিস্থিতি সামাল দেয়া হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বিদ্যুৎ ও শিল্পখাত। এতে আবাসিক খাতের অনেক গ্রাহক দিনের বেশির ভাগ সময় গ্যাস পাচ্ছেন না। গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলে লোডশেডিং পড়তে হয়। আবার গ্যাস ভোগাতে না পারার কারণে রান্নার চুলা জ্বলছে না। উভয় সঙ্কট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে সরকার। বাসাবাড়িতে গ্যাসের ঘাটতি অনেক ভুগিয়েছে। এলপি গ্যাসে রান্না এবং রেস্তোরাঁর ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে মানুষের। এতে করে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে চলমান মূল্যস্ফীতিতে। আর শিল্পের অন্যান্য সঙ্কটের সময় যুক্ত হয়েছে গ্যাসের ঘাটতিজনিত সমস্যা। গ্যাস সঙ্কটে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোনো কোনো শিল্পাঞ্চলে চলমান অস্থিরতা পেয়েছে নতুন মাত্রা। সামনে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশি গ্যাস জুগিয়ে শিল্পে সেটা কমানো হলে কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, তা কেউ বলতে পারে না! প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাকেও গ্যাসের চাহিদা অনেক। বস্ত্র, সিরামিক, সিমেন্ট, স্টিলের মতো শিল্প গ্যাসের ওপর বিপুলভাবে নির্ভরশীল। এদিকে সরকার আবার শিল্পে (প্রধানত নতুন সংযোগে) ব্যবহৃত গ্যাসের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে চাইছে। এতে স্বভাবতই তীব্র আপত্তি রয়েছে উদ্যোক্তাদের। তবে মূল সমস্যা হলোÑ উচ্চ দামেও চাহিদামতো গ্যাস পাচ্ছে না শিল্পখাত। বিগত সরকারের আমলে এর দাম তো কম বাড়ানো হয়নি। তখন সংশ্লিষ্ট সবাই এটি মেনে নিয়েছিলেন এই প্রতিশ্রæতিতে ‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস’ মিলবে। কিন্তু বাসাবাড়িতে বাঁধা বিল পরিশোধকারীরাও গ্যাস ঠিকমতো পাচ্ছেন না। চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কম। এর মধ্যে লোডশেডিং কমাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে কমছে গ্যাসের উৎপাদন। এক সময় দিনে আড়াই হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস উৎপাদন করা হলেও এখন তা দুই হাজার মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। এতে সরবরাহ সঙ্কট বাড়ছে। বড় গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন বাড়ানো না গেলে সরবরাহ আরো কমতে পারে। যদিও ক‚প খনন করে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে সরকার। এতে গ্যাসের মজুত কিছুটা বাড়ছে। প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান জ্বালানি উৎস। বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প, পরিবহন ও গৃহস্থালির কাজে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং উৎপাদন সঙ্কটের ফলে দেশের গ্যাস সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
গ্যাস সঙ্কটের কারণ ও চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের গ্যাস সঙ্কটের মূল কারণ হচ্ছেÑ অপর্যাপ্ত প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ, উন্নত প্রযুক্তির অভাবে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান সম্ভব হয়নি, নীতিমালা ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, দক্ষ পরিকল্পনার অভাবে গ্যাসক্ষেত্রগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, দেশের ৫৬ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন গ্যাসনির্ভর, যা বিকল্প জ্বালানির দিকে যেতে বাধা সৃষ্টি করছে। বিশ্বের অনেক দেশ গ্যাস রফতানি করে বিলিয়ন ডলার আয় করছে। কিন্তু বাংলাদেশে গ্যাসের মজুদ কম থাকায় রফতানি করতে পারছে না; বরং এলএনজি আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। তবে দেশের সমুদ্রসীমায় সম্ভাব্য গ্যাসের মজুদ কাজে লাগানো গেলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। বিদ্যুৎখাতে গ্যাস কমিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে নজর দেয়ার দরকার। বাংলাদেশ এশিয়ার ১৯তম গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। দেশীয় জ্বালানি চাহিদার ৫৬ শতাংশ পূরণ করে গ্যাস। বৃহৎ ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে দেশটিকে তীব্র জ্বালানি সঙ্কটের মুখে পড়তে হয়। বাংলাদেশ অপরিশোধিত তেল ও খনিজ দ্রব্যাদির অন্যতম আমদানিকারক দেশ। এ দেশের জ্বালানি খাত রাষ্ট্র মালিকানাধীন কোম্পানি যেমনÑ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ও পেট্রোবাংলা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এদেশের হাইড্রোকার্বন শিল্পে কাজ করা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে শেভরন, কনোকোফিলিপস, স্ট্যাটওয়েল, গ্যাসপ্রম ও ওএনজিসি। প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের ৫০ শতাংশ আসে শেভরনের গ্যাস ক‚পগুলো থেকে। ভ‚তত্ত¡বীদদের বিশ্বাস, দেশের সমুদ্রসীমার এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ তেল ও গ্যাসের মজুদ রয়েছে। সংরক্ষণ জ্ঞান ও কারিগরি দক্ষতার অভাব বাংলাদেশকে প্রথম সারির বৈশ্বিক হাইড্রোকার্বন প্রস্তুতকারক দেশ হওয়ার সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, চাহিদার তুলনায় গ্যাস উৎপাদন কমে যাচ্ছে। দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস দ্বারা চালিত হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৬০ শতাংশ (সরকারি+বেসরকারি প্রকল্প=৪৮+১৬ শতাংশ), শিল্পক্ষেত্রে ও চা বাগানে ১৮ শতাংশ (১৭+১), ইউরিয়া সার উৎপাদনে ১০ শতাংশ, বাসাবাড়িতে জ্বালানিরূপে ১২ শতাংশ এবং গাড়ির জ্বালানিরূপে ৫ শতাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতি বছরে ৫৬টি এলএনজি কার্গো সরবরাহ করা হয়। সেখানে আমরা এবার ৯০টি কার্গো আনা হচ্ছে। আগামীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ১০ শতাংশ কমাতে পারলে দেশের অনেক চাহিদা মেটানো সম্ভব। সে জন্য দরকার সৌরবিদ্যুৎ খাতে নজর দেয়া।
আবাসিক খাতে গ্যাসের গ্রাহক আছেন ৪৩ লাখ। এর মধ্যে চার লাখ প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন। তারা যতটুকু গ্যাস ব্যবহার করেন, ততটুকুর বিল দেন। মাসে গড়ে তাদের বিল ৫০০ টাকার কম। আর বাকি ৩৯ লাখ গ্রাহক প্রতি মাসে দুই চুলার জন্য এক হাজার ৮০ টাকা করে নির্ধারিত বিল পরিশোধ করেন। গ্যাস না পেলেও এই বিল পরিশোধ করতে হয় তাদের। দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪৪০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলা দিনে সরবরাহ করে ২৮৫ কোটি ঘনফুট। অর্থাৎ, ঘাটতির পরিমাণ ১৪৫ কোটি ঘনফুট। মাঝে কক্সবাজারের মহেশখালীতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান দুটি টার্মিনালের মধ্যে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য একটি থেকে টানা তিন দিন এলএনজি সরবরাহ বন্ধ ছিল। এতে গ্যাস সঙ্কট আরো বেড়ে যায়। তিন দিন ধরে ৩৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ কমেছে।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্রে জানা গেছে, দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ পেলে মোটামুটি চাহিদা মেটানো যায়। রেশনিং করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়। এখন সরবরাহ হচ্ছে ২৭০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ১০৫ কোটি ঘনফুট যাচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয়। বিদ্যুৎখাত এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তাই আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকের গ্যাস সঙ্কট বেড়েছে।
বৃহত্তম গ্যাস বিতরণ সংস্থা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ করে। এ কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাদের দাবি, তাদের দিনে চাহিদা ১৯০ কোটি ঘনফুট। এখন সরবরাহ পাচ্ছেন ১৫২ থেকে ১৫৩ কোটি ঘনফুট। এমন সরবরাহের সময় তারা বিদ্যুৎ খাতে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ঘনফুট দিতে পারতেন। এখন দিতে হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৭ কোটি ঘনফুট। এতে শিল্প ও আবাসিক খাতে ১৩ থেকে ১৪ কোটি ঘনফুটের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিক সময়েও শিল্পে গ্যাসের ঘাটতি থাকে। গাজীপুর তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপক (সঞ্চালন ও বিতরণ) কর্মকর্তা জানান, গাজীপুরে গ্যাসের চাহিদা এখন ৬০ কোটি ঘনফুট, পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ কোটি ঘনফুট। দেশে এক সময় দিনে ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হতো। ২০১৮ সালে উৎপাদন কমতে থাকলে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। উৎপাদন কমে এখন ১৮৪ কোটি ঘনফুটে নেমে এসেছে। আগের চেয়ে এলএনজি আমদানি বাড়ানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। শিল্প পুলিশের তথ্য মতে, গাজীপুর জেলায় মোট কারখানার সংখ্যা দুই হাজার ১৭৬। বেশির ভাগই গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার কাশেম গ্রæপের পরিচালক তাসভীরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, কারখানা চালাতে গ্যাসের চাপ ১০ থেকে ১৫ পিএসআই (প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে চাপ) থাকতে হয়। ১৫ দিন ধরে দুই থেকে তিন পিএসআইয়ের বেশি গ্যাসের চাপ পাওয়া যায়নি। এতে আমাদের উৎপাদন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে। তিতাস গ্যাস নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক জানান, সরবরাহ কম থাকায় অনেক জায়গায় শিল্প ও আবাসিক গ্রাহক গ্যাস কম পাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীতে এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং লিমিটেডের উৎপাদন ক্ষমতা ৪০ টন। উৎপাদন নেমেছে ১০ টনে। গ্যাসের চাপস্বল্পতার কারণে ব্যবসায়িক ক্ষতির বিষয়টি জানিয়ে ২৩ এপ্রিল তিতাসকে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল রোববার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে দেখা যায়, বয়লার মেশিন বন্ধ, গ্যাসের চাপশূন্য পিএসআই। বিসিকের অপর প্রতিষ্ঠান ফেয়ার অ্যাপারেলস লিমিটেডে সকাল থেকে উৎপাদন বন্ধ। শ্রমিকরা বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অপরদিকে, ভ‚তত্ত¡বিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং ইউবিডির সহযোগী প্রফেসর ড. আমিনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, দেশের গ্যাস উৎপাদনে পিছিয়ে থাকার কারণ হচ্ছেÑ নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানে সীমিত বিনিয়োগ, পুরোনো অবকাঠামো ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বাড়াতে না পারা, গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের ঘাটতি, নীতিগত জটিলতা ও আমলাতান্ত্রিক বিলম্ব, বিদেশি বিনিয়োগের অভাব, এলএনজি আমদানি ও নীতিগত দুর্বলতা।