Image description

চিকিৎসা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে দেশে ফেরার নিরাপত্তার বিষয়টি ঘিরে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কাতারের আমীরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আগামী সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বহনকারী ফ্লাইটটি অবতরণ করবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, এপিএস মাসুদুর রহমান ও দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রূপা হকও সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।

খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতা-কর্মীদের ঢল নামবে বলে জানা গেছে। এই বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীকে বিমানবন্দরে নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তার ছক তৈরি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি জানিয়েছে, বিএনপির পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে নেতা-কর্মীদের ভিড় করতে পরামর্শ দেওয়া হলেও নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যাবেন। আর সেই বিষয়টি তারা আমলে রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শনিবার সন্ধ্যায় আমার দেশকে জানান, ‘খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়টি আমাদের জানা আছে। নিরাপত্তার বিষয়টিও খেয়াল রয়েছে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের অপারেশন বিভাগের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের বড় ভিআইপি আসলে তাদের দলের নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দরে ভিড় করে থাকেন। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই পুলিশ বিমানবন্দরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। বিমানবন্দর ও চারপাশের সড়ক নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে। বিমানবন্দর ও আশপাশের ভবনগুলোর রুপটপে থাকবে পুলিশ মোতায়েন। এছাড়াও ওই সব ভবনের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে পুলিশ। এছাড়াও পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক ওয়াকিটকিতে আশপাশের তথ্য একে ক্রাইম অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগকে অবগত করবেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে আশপাশে আগত নেতাকর্মীদের সমবেত হতে দিবে না পুলিশ। তাদের মূল সড়কের একপাশে রাখা হবে। এছাড়াও খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর বিমানবন্দর থেকে ফিরোজা পর্যন্ত পুলিশ সড়ক কর্ডন করে রাখবে। গাড়ি বহরের মধ্যে হঠাৎ করে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেই দিকে লক্ষ করবে পুলিশ।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার বাসা ফিরোজা ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে পুলিশ। আগে থেকে পুলিশ গুলশানের ওই সড়কে অবস্থান নিবে। তার গাড়ি বহর যাতে নির্বিঘ্নে যাতে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে সেই দিকে খেয়াল করবে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, যানজট এড়াতে মহাখালী থেকে উত্তরা পর্যন্ত একমুখী সড়ক করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে গাড়িগুলো দ্রুতই গন্তব্যস্থানে যেতে পারে। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের রুটপ্লান করে রেখেছে পুলিশ। তার গাড়ি বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত এরপর বনানী ফ্লাইওভার হয়ে বনানীর কবরস্থানের সড়কের পাশ হয়ে ফিরোজায় তার বাসভবনে যাবে বলে জানা গেছে। এসময় যানবাহনগুলো পুলিশ বিকল্প সড়কে ঘুরিয়ে দিবে।

এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি সরাসরি ফ্লাইটে লন্ডন থেকে দেশে আসার কথা ছিল। ওই ফ্লাইটে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল এমন দুই কেবিন ক্রুকে শুক্রবার মধ্যরাতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন আল কুবরুন নাহার কসমিক ও মো. কামরুল ইসলাম ।

বিমান সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।