
গুলশান-বনানী এলাকায় চলাচল বন্ধ করে দেয়ার কারণে সড়ক বন্ধ করে তাণ্ডব চালিয়েছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। গতকাল দুপুরে চালকরা সড়ক অবরোধ করলে তাদের ছবি বা ভিডিও তুলতে যাওয়ায় পথচারী, মোটরসাইকেলচালক ও সাধারণ মানুষদেরকে ধাওয়া দিয়ে মারধর ও লাঠিপেটা করছেন অটোরিকশাচালকরা। এমনকি দু’টি প্যাডেলচালিত রিকশাসহ চালকদের মারধর করে ব্রিজের ওপর থেকে লেকের পানিতে ফেলে দেন তারা। ওই রাস্তা দিয়ে কাল দিনভর কাউকেই প্রবেশ করতে দেননি তারা। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এর আগে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট রঙের ও নিবন্ধিত প্যাডেলচালিত রিকশা চলতে পারতো গুলশান-বনানী এলাকায়। তবে গত কয়েক মাস ধরে বাইরের ব্যাটারিচালিত রিকশা ওই এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করলে যানজট ও বিশৃঙ্খলা বাড়তে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৯শে এপ্রিল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), গুলশান সোসাইটি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর পক্ষ থেকে যৌথভাবে গুলশান সোসাইটিতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি অটোরিকশাচালকরা। তারা গত ক’দিন ধরে গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। কিন্তু গতকাল সকালে সোসাইটির বাসিন্দারা গুলশানের শেষ মাথায় এবং বনানী এলাকার শুরুর রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। তাদের রিকশা আটক করায় তারা বনানী ১১ নম্বর এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন।
সরজমিন দেখা যায়, আন্দোলনের নামে তারা প্রথমেই গুলশান-বনানী এলাকায় প্যাডেলের রিকশাচালকদেরকে টার্গেট করেন। প্যাডেলের রিকশাচালকদেরকে সামনে পেলেই যাত্রীসহ মারধর শুরু করেন তারা। পাঠাও চালকদেরকেও ধাওয়া দিয়ে লাঠিপেটা করতে থাকেন। আর এইসব কাণ্ডের ছবি বা ভিডিও যারাই তুলতে যান তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে মারধর করছেন অটোরিকশাচালকরা। ছবি-ভিডিও করার সময় বনানী-১১ নম্বর রোডের মাথায় বেশক’জন পথচারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে তারা। বনানী-১১ নম্বর রোড দিয়ে ঢুকতে গিয়ে গতকাল দুপুরে মোটরসাইকেলচালকসহ পথাচারীদেরকে লাঠিপেটাও করেছেন রিকশাচালকরা। কেউ তাদের প্রতিবাদ করতে পারেনি। প্রতিবাদ করতে গেলেই তেড়ে যান সকল অটোচালকেরা। আন্দোলনরত রিকশাচালকেরা বলেন, গুলশান-বনানীতে প্যাডেলের রিকশা চলতে পারলে আমাদের ব্যাটারিচালিত রিকশাও চলতে দিতে হবে। আর তা না হলে কেউই রিকশা চালাতে পারবে না।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বর্তমানে বনানী-১১ নম্বর রোডে আন্দোলন করছিল। পরিস্থিতি আমাদের হাতের বাইরে ছিল। তারা যা খুশি তাই করছিল। যারাই তাদের আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও নেয়ার চেষ্টা করছে তাদের ধাওয়া দিয়ে লাঠিপেটা করছিল অটোচালকরা। পরে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে সেনাবাহিনী ও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।