
রাস্তা ছাড়াই এক বছরের বেশি সময় ধরে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ছোট ফেনী নদীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে সেতু। দুই পাশে কোনো রাস্তা না থাকায় দুপারে বসবাসরত এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করে সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের আশ্রাফপুর ও মোমারিজপুর দুই গ্রামের সংযোগ সৃষ্টির জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ছোট ফেনী নদীর ওপর ৬০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করে ফেনীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানা যায়, নদীর তলদেশ থেকে ২০ ফুট উচ্চতায় নির্মিত সেতুটি নদীর দুই পারের চেয়ে অনেক উঁচু হওয়ায় সেতু দুই পাশে কোনো রাস্তা তৈরি করা হয়নি। ফলে স্থানীয় এলাকাবাসী নিজস্ব খরচে সেতু পাশে নিচে দিয়ে অস্থায়ী একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দুই পাশে এলাকাবাসী চলাচল করছে।
স্থানীয় কৃষক রঞ্জিত দাস জানান, ছোট নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের খবরে এলাকাবাসী অনেক খুশি হয়েছিল কিন্তু এক বছর পার হয়ে গেলেও ব্রিজের দুই পাশে রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এ ব্রিজটি নির্মাণ করতে গিয়ে বিগত সরকারের নেতাদের উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু এলাকাবাসীর কোনো উন্নয়ন হয়নি বরং অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। অপরিকল্পিত ব্রিজ নির্মাণের কারণে ইতিমধ্যে নদীভাঙনে এলাকার অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।
ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার হারিছ আহম্মদ পেয়ার জানান, আমরা জানি না সেতু নির্মাণের সময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কি হিসেবে এত উচুঁ রাস্তার সংযোগ না দিয়ে এটি অনুমোদন করলেন? এখন আগামী বর্ষার আগেই দ্রুত রাস্তা নির্মাণ না হলে মাতুভূঞা ও বেকের বাজারগামী এলাকাবাসী মারাত্মক অসুবিধার সম্মুখীন হবেন।
দাগনভুঞাঁ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়নি। জায়গার মালিকদের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে অতি শিগগির রাস্তা নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজহারুল ইসলাম জানান, রাস্তা না থাকলে ব্রিজটি নির্মাণ করে জনগণের কোন উপকারে আসছে না। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিস্তারিত জানিয়েছি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছালেহ আহম্মদের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ফেনীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোহাম্মদ আলী ফারুককে ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।