
আগামী বুধবার (৯ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হতে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ আমেরিকার পণ্যে পালটা শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতও সেই পথে হাঁটবে কিনা, তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
তবে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ভারত সরকারের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পালটা শুল্ক ঘোষণার পথে হাঁটছে না ভারত। কারণ এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য, ভারতের ২৬ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভারতসহ একাধিক দেশ ট্রাম্পের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে দর কষাকষি শুরু করে দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ট্রাম্পের শুল্ক আদেশের একটি ধারা খতিয়ে দেখছে, যা অ-পারস্পরিক বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতিকারের জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণকারী বাণিজ্য অংশীদারদের জন্য সম্ভাব্য অবকাশ প্রদান করে।
আরেক সূত্র বলছে, বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে দ্রুত বোঝাপড়া শুরু করেছে চীন। ভিয়েতনাম কিংবা ইন্দোনেশিয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকতে চাইছে ভারত। চীন ইতোমধ্যে মার্কিন পণ্যে পালটা শুল্কারোপের কথা ঘোষণা করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পরপরই ভারত পালটা শুল্কারোপের সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছে। যেখানে ইউরোপীয় কমিশনও চীনের পর মার্কিন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্কারোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শুল্ক নিয়ে অচলাবস্থা দূর করার জন্য, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে শরৎকালের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে সম্মত হয়েছিল। যদিও এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
বাণিজ্য উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে মোদির প্রশাসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বেশ কিছু ছাড় দিয়েছে -যেমন উচ্চমানের বাইক এবং বোর্বনের ওপর শুল্ক কমানো। আমেরিকান টেক জায়ান্টদের উপর প্রভাব ফেলে এমন একটি ডিজিটাল পরিষেবা কর-ও বাতিল করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন যে, ট্রাম্পের শুল্ক এই আর্থিক বছরে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ২০-৪০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত ব্যাহত করতে পারে। বিশেষ করে হীরা শিল্পের ওপর আঘাত হানতে পারে, যা তার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি রপ্তানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়, হাজার হাজার কর্মসংস্থানকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।