
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) এখনো সক্রিয় বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের প্রকৌশলীরা। সংস্থাটির সাধারণ প্রকৌশলীরা এমন অভিযোগ করেছেন। তারা বলছেন, সরকারের নীতি ও নির্দেশনা বাস্তবায়নেও পরিষদের নেতারা বাধা দিচ্ছেন।
এলজিইডি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলি আখতার হোসেনকে আহ্বায়ক ও প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম খানকে সদস্য সচিব করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের একটি শাখা কমিটি গঠন করা হয়। ১০১ সদস্যের এ কমিটিতে ২০১৩ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রয়েছেন ১৮ জন। এরা এলজিইডিতে বিভিন্ন উপায়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন।
প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত সরকারের সময়ে বিশেষ সুবিধা নিয়ে এখনো অধিদপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন—জামাল উদ্দিন, ফজলুল করিম, মানস মন্ডল, তরুন কুমার বৈদ্য, আবিনাস হোসনেয়ারা, জয়শ্রী দে, আমিনুল ইসলাম মৃধা, মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, মিজানুর রহমান, আহসান আলী, খায়রুল বাশার, তাসনুফা আফরোজ, পার্থ কুমার সরকার, ভাস্কর মৃধা, শওকত হোসেন, তানভীর ভূইয়া, সেলিম চৌধুরী ও শারমিন জেবীন। এদের অধিকাংশই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এলজিইডির একজন ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ সংস্থাটিতে অধিকাংশ নিয়োগ হয়েছে উচ্চ আদালতের আদেশে কিংবা নামমাত্র পরীক্ষার মাধ্যমে। ২০১২ সালের নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছিল ২০০৬ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী। ছয় বছর পর পিএসসি এ পরীক্ষার আয়োজন করায় এ সময়ে যারা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেছেন তারা বাদ পড়েছেন। পিএসসির আলোচিত গাড়িচালক আবেদ আলীর সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষার আয়োজন করা হয় বলে এলজিইডিতে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে। অংশগ্রহণ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছিল যেন শুধু ছয় বছর আগে যারা আবেদন করেছে, তারাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং তারাই চাকরি পায়। এতে ১৫৪টি শূন্য পদের বিপরীতে বৈধ আবেদন ছিল এক হাজার ৫১৮টি। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মাত্র ৩৫২ জন, আর উত্তীর্ণ হয় ১৬২ জন। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ১২৭ জন, যাদের মধ্যে সবাই পাস করেন।
২০০৬ সালের বিজ্ঞপ্তির আলোকে ২০১৩ এবং ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রাপ্তরাও সিনিয়রিটি দাবি করে আসছেন ২০০৬ সাল থেকেই। কিন্তু পিএসসির সুপারিশের তারিখ ও নিয়োগের তারিখ ঠিক রেখে দাবি আদায়ে করা হয় একের পর এক মামলা। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই আটকে আছে এলজিইডির প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের পদোন্নতি। একইভাবে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্তদের উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি বঞ্চিত করে আওয়ামী লীগ সরকার।
এলজিইডি সূত্র বলছে, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সিনিয়র প্রকৌশলীদের যথাসময়ে পদোন্নতি প্রদান না করায়, তাদের মধ্যে মারাত্মক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব নিজাম উদ্দিনের বক্তব্য নিতে সরাসরি ও ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তবে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।