Image description
আজ থেকে শুরু হচ্ছে পোশাক শ্রমিকদের ঈদের ছুটি

ঈদের আগে যথাসময়েই দেশের অধিকাংশ পোশাক কারখানায় বেতন, বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বোনাস দেয়া হয়েছে ৯১ শতাংশ কারখানায়। একই সাথে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেয়া হয়েছে প্রায় ৯৯ শতাংশ পোশাক কারখানায়। এ দিকে মার্চ মাসের ১৫ দিনের বেতনও পরিশোধ করা হয়েছে ১১৬টি কারখানায়। অনেক পোশাক কারখানায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে শ্রমিকদের ঈদের ছুটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক দিন পর দেশের গার্মেন্ট শ্রমিকরা স্বস্তির মধ্য দিয়ে ঈদ যাত্রা শুরু করছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার পোশাক শ্রমিকদের ছুটি তিন দিনের সরকারি ছুটিসহ ১০ দিন পর্যন্ত বাড়তে পারে। কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকরা তাদের সাপ্তাহিক ও বার্ষিক অর্জিত ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে অতিরিক্ত ৬ থেকে ৭ দিনের ছুটি নিতে পারবেন।

এ দিকে বাংলাদেশ তৈরী পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকার এক নির্বাহী আদেশে ৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। বিজিএমইএ জানিয়েছে, তবে বেসরকারি শিল্প বা কলকারখানার ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। ফলে শ্রম আইন অনুসরণ করে অন্যান্য কারখানাভিত্তিক উৎসব ছুটির সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ছুটির বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঈদুল ফিতরের ছুটি কবে থেকে শুরু হবে তা শ্রম আইন অনুযায়ী কারখানার ব্যবস্থাপনা ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা আলোচনা করে নির্ধারণ করবেন।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম নয়া দিগন্তকে বলেন, সরকারি ছুটি তিন দিন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে অনেক কর্মী ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত ছুটি বাড়াচ্ছেন। কিছু শ্রমিক ইতোমধ্যে তাদের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ করে এই সময় ছুটি বদলে নিয়েছেন। আবার কিছু শ্রমিক ছুটি শেষে কাজে ফিরে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কাজ করে পুষিয়ে দেবেন। এভাবে সরকারি তিন দিনের ছুটিসহ মোট ৮ থেকে ১০ দিনের ছুটি নিচ্ছেন শ্রমিকরা। তবে কাজের চাপের কারণে কিছু কারখানা বাড়তি ছুটি মঞ্জুর করতে না পারায় শ্রমিক ও কারখানা মালিকদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই ছুটি নির্ধারণ করা হচ্ছে।

এ দিকে বিজিএমইএ জানিয়েছে, ২৬ মার্চ থেকে ছুটি শুরু করবে মোট ১৬১টি কারখানা, আর ২৭ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করেছে ৩৭৪টি কারখানা। অন্য দিকে, ২৮ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করেছে ৬৪৮টি কারখানা এবং ২৯ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করেছে ৯২৪টি কারখানা।

এ দিকে মোট ২০৭টি কারখানা এখনো তাদের কর্মীদের ঈদ বোনাস পরিশোধ করেনি। তবে, কারখানাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, রমজান মাসের ২০ তারিখের মধ্যে বোনাস পরিশোধ করতে হবে এবং ঈদের ছুটির আগে মার্চ মাসের বেতনের অর্ধেক পরিশোধ করতে হবে।

এ ছাড়া, ২৪টি কারখানা এখনো তাদের কর্মীদের ফেব্রুয়ারির বেতন পরিশোধ করেনি। বিজিএমইএ-এর তথ্য অনুযায়ী, একটি কারখানা এখনো তাদের কর্মীদের জানুয়ারির বেতন পরিশোধ করেনি। শ্রম আইন অনুযায়ী, কারখানা মালিকদের পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিবসের মধ্যে কর্মীদের বেতন পরিশোধ করতে হবে।

ওদিকে শ্রমিকদের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ না করায় বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১১টি কারখানা অস্থিরতার ঝুঁকিতে রয়েছে। ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমআইবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৩ হাজার ৫৫৫টি রফতানিমুখী পোশাক কারখানা রয়েছে, যেখানে প্রায় ৩০ লাখ ৫৩ হাজার শ্রমিক কাজ করেন।

চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দিন সরকারি ছুটিসহ (২৯-৩১ মার্চ) টানা পাঁচ দিন ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া, ৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণার ফলে শুক্র-শনিসহ সরকারি চাকরিজীবীরা ৯ দিন ছুটি পাবেন ঈদে।