
মোবাইল ফোন হাতে না থাকলে মনে হয়, কিছু একটা নেই! চার্জে দিলেও সেটি এমন জায়গায় রাখছেন, যেন হাতের নাগালেই থাকে। বিছানার পাশে সুইচবোর্ড না থাকলে এক্সটেনশন বোর্ডের সাহায্যে মোবাইল চার্জ দিচ্ছেন। কারণ একটাই—মোবাইলটা হাতছাড়া করা যাবে না। এমনকি ওয়াশরুমে যাওয়ার সময়ও সঙ্গে নিয়ে যান অনেকেই।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, মোবাইল ছাড়া থাকলে যে অস্থিরতা তৈরি হয়, তা একটি মারাত্মক রোগ। এর নাম নোমোফোবিয়া।
নোমোফোবিয়া কী?
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের মধ্যে মোবাইল আসক্তি ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, দিন দিন নোমোফোবিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন গেমের কারণেই এই আসক্তি দেখা দিচ্ছে।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও সমস্যা আলাদা নয়। মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা নোমোফোবিয়ার জন্ম দেয়।
নোমোফোবিয়ার লক্ষণ
- সবসময় ফোনের নোটিফিকেশন চেক করা।
- মেসেজ এসেছে কি না, তা নিয়ে অযথা উদ্বিগ্ন থাকা।
- ফোন হাতছাড়া হলে অস্থিরতা বা আতঙ্ক অনুভব করা।
- ফোনের ব্যাটারি লো বা নেটওয়ার্ক সমস্যা হলে মানসিক চাপে থাকা।
- ফোন বন্ধ হয়ে গেলে প্যানিক অ্যাটাকের মতো অনুভূতি হওয়া।
- অনিদ্রা, অবসাদ, খিটখিটে মেজাজ ও খাদ্যে অনীহা দেখা দেওয়া।
- কোনো কারণ ছাড়াই স্মার্টফোন স্ক্রল করতে থাকা।
কীভাবে এড়ানো যায়?
- মোবাইল ব্যবহারের সময় নির্দিষ্ট করুন।
- জরুরি কাজ ছাড়া ফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
- সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তি কমান।
- পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান ও সামাজিক মেলামেশা বাড়ান।
- রাতে ঘুমানোর সময় ফোন থেকে দূরে থাকুন।
- সমস্যা গুরুতর হলে মনোবিদের পরামর্শ নিন।
নোমোফোবিয়াকে অবহেলা করলে এটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। তাই মোবাইল ব্যবহারে আরও সচেতন হওয়া জরুরি।