Image description
ইসিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠি

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)সহ আশু বাস্তবায়নযোগ্য নির্বাচনসংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনে আশু করণীয়/সুপারিশ ও বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সময়সীমা নির্বাচন কমিশন (ইসি)-এর কাছে চেয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ইসিকে এ-সংক্রান্ত চিঠিও দিয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বলেছে, আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলোর তালিকা নির্ধারিত ছকে অতি জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। সংস্কার সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামত নেওয়ার পাশাপাশি ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ চলার মধ্যে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগর সংস্কার অনুবিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (শুদ্ধাচার শাখা) মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত চিঠি ১৯ মার্চ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে। সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অবহিতকরণ বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার অনুশাসন মোতাবেক ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে ছয়টি কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর মধ্যে ১. নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ২. পুলিশ সংস্কার কমিশন ৩. বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ৪. দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং ৫. জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন থেকে আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো চিহ্নিত করে আইন উপদেষ্টা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন। ১৩ মার্চ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংস্কার কমিশনসমূহের বাছাইকৃত আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়/বিভাগ নির্ধারিত ছকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিদ্ধান্ত : সংস্কার কমিশনসমূহের বাছাইকৃত আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ নির্ধারিত ছকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠাবে।

ইসি, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের কাছে ৯ অগ্রাধিকার : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (সংশোধন); নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ২০০৯ (সংশোধন); নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ সংশোধন; নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যম নীতিমালা (স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক) পর্যবেক্ষণ ও সাংবাদিক নীতিমালা (সংশোধন); রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন; হলফনামার খসড়া; ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ (অভ্যন্তরীণ ও প্রবাসী); পোস্টাল ব্যালট পরীক্ষানিরীক্ষা করা; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন ও রাজনৈতিক ও নির্বাচনি অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিত করা। ইসি কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠি পাওয়ার পর তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রস্তাব বাছাইয়ে কাজের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, মাত্র চিঠি হাতে এসেছে। বিষয়গুলো দেখে আলোচনা করে তারপর বলা যাবে।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান, ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো নেওয়ায় সরকারের উদ্যোগ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে যুক্তি হলো, এর মাধ্যমে নির্বাচন ত্বরান্বিত করার কাজে সহায়ক হবে। সরকার ইচ্ছে করলে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো অধ্যাদেশ জারি করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনসংক্রান্ত অতি জরুরি সংস্কার সুপারিশগুলোর আরপিও সংশোধন, আইন-বিধি সংশোধন করা যেতে পারে। ঐকমত্য কমিশনের এ সদস্য বলেন, আমরা ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে দলগুলোর মতামত নিচ্ছি। এর মধ্যে অধিকাংশই সংবিধানসংক্রান্ত। এগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। কিন্তু সরকারের ১১১টি সুপারিশের মধ্যে আশু বাস্তবায়নযোগ্য তালিকা হলে আইনি সংশোধন সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের মাধ্যমে এক্সপার্টদের মতামত নিয়ে অধ্যাদেশ করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব।