Image description
অদ্ভূত ঘটনা নজরে আসল, সেনাসদর কেবল নেত্রনিউজকে একটা বিবৃতি পাঠিয়েছে। এইটা কৌতুহলউদ্দীপক শুধু নয়, নেত্রনিউজের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধইরা আমাদের যে বিশ্বস্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হইছিল, তারে দুই রকম সন্দেহের মুখে ফেলে এই ঘটনা। এক. নেত্রনিউজ কি এই মুহূর্তে সেনাসদরের এমবেডেড মিডিয়া? দুই. সেনাসদরের এই 'বিবৃতি' অসত্যও হতে পারে, বা কিছুদিন পর আইএসপিআর এই বিবৃতি অস্বীকারও করতে পারে। সেনাসদর কি এই স্পেস রাইখা দিয়েই কেবল নেত্রনিউজকে ব্যবহার করল?
 
যাই হোক, এই সন্দেহগুলো রেখেই নেত্রনিউজের মাধ্যমে প্রকাশিত সেনাসদরের বিবৃতিটা পড়লাম। বিবৃতিটা আরো ইন্টারেস্টিং, কারণ, হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্য মোটেই অস্বীকার করা হয় নাই এই বিবৃতিতে, বরং এনসিপি নেতা হাসনাতের বক্তব্যের সত্যতা স্বীকার কইরা দুইটা অতিরিক্ত ভেল্যু যোগ করেছে নেত্রনিউজের এই সেনাসদর।
 
এক. বলা হইছে, সেনাপ্রধান পারসোনাল অপিনিয়ন দিয়েছেন। বাধ্যবাধকতা না। দুই. হাসনাত নিজ উদ্যোগে দেখা করেছেন। সেনাসদরের ডাকে তারা আসেন নাই। এই বিবৃতি মতে, অপিনিয়নটা হল, 'আওয়ামী লীগের যেসব নেতারা ফৌজদারি মামলায় জড়িত নয় ও ক্লিন ইমেজের অধিকারী তাদের সমন্বয়ে নতুন আওয়ামী লীগ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ফলপ্রসু ও আন্তর্জাতিক মহলে অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা পাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকার ও সব রাজনৈতিক দল মিলে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।' এইটা নেত্রনিউজের কোট।
 
এমন কি, হাসনাতের এই কোটও অস্বীকার করা হয় নাই, যেখানে তাকে সেনাসদরের ঊর্ধতন কর্মকর্তা ভর্ৎসনা করে বলেছেন, 'ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডোম এন্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ‘ইনক্লুসিভ’ ইলেকশন হবে না।' বরং ব্যাখ্যা দেওয়া হইছে যে, 'এই দুই ছাত্র সমন্বয়ককে সেনাবাহিনী প্রধান অত্যন্ত স্নেহের দৃষ্টিতে ছেলের মতো দেখতেন। তিনি [স্নেহবৎসল] পরিবেশে তাদের সঙ্গে নানা আলাপচারিতা করেন। প্রাসঙ্গিকভাবে তাদের নতুন দল গঠনের শুভকামনা ও পরবর্তী রাজনৈতিক পথ চলার বিষয়ে নানা প্রসঙ্গে আলাপ করেন।'
 
তো, সেনাসদরের এই বক্তব্যের মাধ্যমে কী প্রতিষ্ঠা হল? আমার মতে, সর্বপ্রথম হাসনাতের বক্তব্যর সত্য প্রতিষ্ঠা হল। যদিও, অন্যান্য এনসিপি নেতারা সৌজন্যতা দেখিয়েছেন, সেনাসদরের সাথে কোন বিরোধের আশঙ্কাকে নাকচ কইরা হাসনাতের বিবৃতিকে অনুচিত বলেছেন। দ্বিতীয়ত, সেনাপ্রধান যে নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে চান, এবং এ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলগুলো মিলে সিদ্ধান্ত নিক, তা চান, এই সত্য। এইটা বেশ ভাল ঘটনা হল। সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি পরিস্কার হল।
 
এলা বলি। সেনাপ্রধান যখন এই ধরনের পারসোনাল অপিনিয়ন দেন, তার মর্মার্থ কি পারসোনাল? আমাদের যাদের রাজনৈতিক দল নেই, বা তেমন কইরা ইউটিউব বা নেত্রনিউজ, মানে গোপন তথ্যের ভার নেই, এই 'ইনফরমেশন'টি আমরা কীভাবে বুঝি? আমি পড়ি, হাসনাত আব্দুল্লাহ যেভাবে পড়েছেন, সেদিনের সোশাল মিডিয়া পোস্টে, সেভাবে। চাপ তৈরীর ঘটনা। চোখ কান খোলা রাইখা সামনের দিনগুলোরে অনুবাদ কইরেন। বুঝবেন।