
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে মুসলমানদের মধ্যে থেকে বড় একটি অংশ কেন ইসলামি রাজনীতির ব্যাপারে প্যানিকড (আতঙ্কিত) হয়ে উঠে? এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. মির্জা গালিব।
রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, আমার মনে হয়, ইসলামি রাজনৈতিক দল ৫১% ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসলেও টিকে থাকতে পারবে কি না, সেইটা নির্ভর করবে সমাজের বাকী ৪৯% লোকদের সঙ্গে তার সম্পর্কের ওপর। যদি এই বাকী ৪৯% লোকদের একটা বড় অংশ প্যানিকড হয়ে যায়, যদি মনে করে ইসলামি দলের সরকারের চাইতে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বেটার, তাহলে সমাজে ঐক্যের পরিবর্তে একটা ফিতনা তৈরি হবে। আর এর সুযোগ নেবে নানান অপশক্তি।
মির্জা গালিব বলেছেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে মুসলিমদের এইরকম একটা বড় অংশ কেন ইসলামি রাজনীতির ব্যাপারে প্যানিকড হয়ে উঠে? এর কারণ হল, আমরা ২০০ বছরের ব্রিটিশ গোলামির মধ্য দিয়ে গিয়েছি। ব্রিটিশ উপনিবেশ শেষ হয়েছে কিন্তু আমাদের শিক্ষা আর সংস্কৃতিতে এখনো ঔপনিবেশিক প্রভাব যায় নাই। এই ঔপনিবেশিক প্রভাবেই আধুনিক মনের কাছে ইসলামের রাজনৈতিক সিস্টেম প্রি-মডার্ন এবং অগ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে।
এই সমস্যার সমাধানের উপায় হিসেবে ওই পোস্টে সাবেক এই শিবির নেতা বলেছেন, ইসলামি রাজনীতি তাই শুধু সমাজের একটা অংশকে ভাল মুসলিম বানানোর কাজে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, পুরো জাতিকে ইসলামের ব্যাপারে রহমতের সঙ্গে, প্রজ্ঞার সঙ্গে আস্থায় নিয়ে কাজ করতে হবে। আরবান মিডল ক্লাসের সঙ্গে এনগেইজমেন্টের রাস্তা খুলতে হবে। ইসলাম বাদ দিয়া মডারেট হয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। বরং ইসলামকে আমাদের জাতীয় কালচার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ব্রিটিশদের আগে বাংলায় আমাদের যে কয়েকশ বছরের মুসলিম শাসনের ইতিহাস আছে তার সঙ্গে জাতীয়ভাবে কানেক্টেড হইতে হবে।