Image description
আতাউল্লাহ গ্রেপ্তার হলেও শেষ হচ্ছে না আরসা অধ্যায়

মিয়ানমারভিত্তিক বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-এর (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ ওরফে আবু আমর জুনুনি গ্রেপ্তার হলেও শেষ হচ্ছে না তাদের অধ্যায়। প্রভাব পড়বে না সার্বিক কার্যক্রমে। বরং ৩৪ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আগের মতোই বজায় থাকছে আরসার আধিপত্য। এরই মধ্যে আরসার নতুন নেতা হিসেবে এনেছে ওস্তাদ খালেদকে। দায়িত্ব নেওয়ার পরই ওস্তাদ খালেদ ইঙ্গিত দিয়েছেন, আরাকান এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, আরসা একক ব্যক্তিকেন্দ্রিক সংগঠন নয়। তাই প্রধান আতাউল্লাহ গ্রেপ্তার হলেও আরসার কার্যক্রম থেমে থাকবে না। আরসার কার্যক্রম থামাতে প্রয়োজন তাদের অর্থায়ন ও রিক্রুট সিস্টেম ধ্বংস করা। একই সঙ্গে সক্রিয় সদস্যদের গ্রেপ্তারের আওতায় আনা। ক্যাম্পে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার ইঙ্গিত মিলেছে আরসার কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা ওস্তাদ খালেদের বিবৃতিতে। গতকাল রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে দেওয়া এক বিবৃতিতে খালেদ বলেন, পুরো দুনিয়া ষড়যন্ত্র করলেও আরসাকে শেষ করা যাবে না। আমাদের আমির আবু আমর জুনুনি ক্যাম্পে, আরাকান, দেশে-বিদেশে অসংখ্য বাঘ তৈরি করে গেছেন। তাই তিনি গ্রেপ্তার হলেও ময়দানে রয়েছে তার তৈরি করা হাজার হাজার বাঘ। তাদের নিয়েই আমরা কাজ করে যাব আগের মতোই। ক্যাম্পে এবং বাইরে প্রত্যেক সদস্য নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হবে। যার যে দায়িত্ব আছে তা পালন করতে হবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজারের ৩৪ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে বেশ শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে আরসার। ধারণা করা হচ্ছে- রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে আরসার কমপক্ষে ৫ হাজার প্রশিক্ষিত সদস্য রয়েছে।

এ ছাড়া ক্যাম্পের বিভিন্ন সালিশ-বৈঠক, মাদক-অস্ত্র কারবার ও চোরচালান নিয়ন্ত্রণে তৈরি করেছে বিশাল চেইন। তাদের সংখ্যাও হবে হাজারের ওপরে। গত ১৮ মার্চ আরসার আমির আতাউল্লাহ গ্রেপ্তার হলেও ক্যাম্পে নিজেদের অবস্থান অটুট রয়েছে আগের মতোই। এরই মধ্যে আতাউল্লাহর বিকল্প হিসেবে আরসার কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ওস্তাদ খালেদ। এ ছাড়া আরসার বর্তমান শীর্ষ নেত্বত্বে কয়েকজনকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন মৌলভী লাল মোহাম্মদ, মৌলভী সিরাজুল মোস্তফা ওরফে সিরাজুল্লাহ ওরফে সিরাজ, দ্বীন মোহাম্মদ (কক্সবাজারে অবস্থান), কাউসার, মৌলভী মোহাম্মদ করিম, হাফেজ হাফেজুর রহমান এবং মৌলভী মোহাম্মদ হোসেন অন্যতম। একই সঙ্গে আগের মতোই বিভিন্ন ক্যাম্পের দায়িত্ব পালন করবেন মোহাম্মদ ছলিম, শওকত উল্লাহ, মোহাম্মদ সালাম, জিয়াউর রহমান, মো. ইলিয়াছ, মো. আজিজুল হক, মোর্শেদ ওরফে মুর্শিদ, নুর মোহাম্মদ, আনাস, নজিম উদ্দিন, আবুল কালাম ওরফে আবু, হামিদ হোসেন মৌলভী মো. জকোরিয়া, খাইরুল আমিন, মাস্টার আবদুর রহিম ওরফে রকিম, জাহিদ হোসেন ওরফে লালু, ফয়েজ উল্লাহ, ছমির উদ্দিন ওরফে ছমি উদ্দিন ওরফে নুর কামাল, সালেহ আহমদ, মোজাম্মেল ওরফে লাল বদিয়া, তোফাইল, মাস্টার শফি আলম, আবদুস সালাম ওরফে জাকের মুরব্বি, জকির, হাফেজ আয়াছ, মাস্টার কাশিম, মাস্টার শুক্কুর আলম ও মোস্তফা কামাল। একাধিক রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা বলেন, আতাউল্লাহ গ্রেপ্তার হলেও ক্যাম্পে তাদের অবস্থান রয়েছে আগের মতোই। ক্যাম্পে সক্রিয় থাকা সদস্যদের গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আরসার শক্তি অক্ষুণ্ন থাকবে।