
গত বছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশিদের জন্য অধিকাংশ ক্যাটাগরির ভিসা বন্ধ রেখেছে ভারত। শুধু জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের জন্য সীমিত আকারে প্রদান করা হচ্ছে মেডিকেল ভিসা।
তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধের পরও ভারতীয় মেডিকেল ভিসা ইস্যুর পরিমাণ বাড়াচ্ছে না ভারত।
বুধবার (১৯ মার্চ) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশটির ছয় কর্মীর দাবি, দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি এবং কর্মী সংকটের কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগে জনকূটনীতির এক সুবর্ণ সুযোগ নিচ্ছে চীন।
২০২৩ সালে বাংলাদেশিদের জন্য ভারত সরকারের ইস্যু করা সিংহভাগ ভিসা ছিল চিকিৎসা-সংক্রান্ত। ভারতের তুলনামূলক সাশ্রয়ী চিকিৎসাব্যবস্থা এবং বাংলা ভাষাভাষী হাসপাতাল কর্মীদের কারণে চিকিৎসা নিতে সেখানে বাংলাদেশিদের যাতায়াত বাড়ছিল। ২০২৪ সালের আগস্টের আগে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার মেডিকেল ভিসা ইস্যু করা হতো, এখন সেখানে হাজারের কম ভিসা দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে অবগত এক বাংলাদেশি কর্মকর্তা বলেছেন, কোথাও শূন্যতা সৃষ্টি হলে অন্য কেউ তার সুযোগ নেবেই। এখন ভারতের বদলে অনেকে চীন ও থাইল্যান্ড যাচ্ছে।
ভারত ও বাংলাদেশের সরকারি তথ্যমতে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জন্য ২০ লাখের বেশি মেডিকেল ভিসা ইস্যু করেছিল ভারত। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দৃশ্যপটে চীনের উপস্থিতি জোরালো হচ্ছে।
চলতি মাসে কয়েকজন বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য চীনের ইউনান প্রদেশে গেছেন।
এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশিদের জন্য মেডিকেল ট্যুরিজম পর্যালোচনা শুরুর দ্বার উন্মোচিত হলো।’
ওয়েন আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অন্তত ১৪টি চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ২৩ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। গত সাত মাসে তাদের পক্ষ থেকেই সর্বাধিক বিনিয়োগ এসেছে।’
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক দৃঢ় করতে বেইজিং আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাবে।
সামগ্রিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য জানতে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে অন্যদিক থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।