Image description
 

আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ। পুরো নাম- আবু আম্মার জুনুনী। জন্ম ১৯৭৭ সালে, পাকিস্তানের করাচিতে। বাবা গোলাম শরীফ। সাত ভাই ও দুই বোনের মধ্যে অষ্টম তিনি। ৬ বছর বয়সে চলে যান সৌদি আরবের রিয়াদে। ইসলামি শিক্ষায় উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষকতা করেন মক্কা ও রিয়াদে। ২০১৩ সালে আরসার প্রধান হিসেবে যোগ দেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি মিয়ানমার জান্তা সরকারের সৃষ্টি। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায় আরসা। ফলাফল স্বরূপ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন অভিযান। এর জেরে নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা।

জানা গেছে, রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমর্থকদের কাছে এ আতাউল্লাহ নিজেকে একজন ‘মুক্তিকামী সৈনিক’ হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি সৌদি আরবের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে লড়াইয়ে নামেন। সমালোচকরা মনে করেন, তার বেপরোয়া সিদ্ধান্তে বিদ্রোহের কারণে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার জীবন বিপর্যস্ত। ফলে তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য ‘অভিশাপ’।

 

গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারভিত্তিক স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ রিচার্ড হর্সি বলেন, ‘আতা উল্লাহ খুবই ক্যারিশমাটিক। সে সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। এমনভাবে কথা বলে যেন রোহিঙ্গাদের কষ্ট অনুভব করতে পারছে তিনি।

 

ধারণা করা হয়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ চেকপোস্টে আতাউল্লাহ’র নির্দেশেই হামলা চালিয়েছিল আরসা। এরপর সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ৩০ বছর বয়সেই সে একটি বিদ্রোহী সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। শুরুতে এই সংগঠনের অল্প কয়েকটি বন্দুক ছিল, বেশিরভাগ সময় লাঠি ও ছুরি হাতেই হামলা চালাত তারা। পরবর্তীতে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র আসতে থাকে তাদের হাতে।

জানা যায়, তার বাবা করাচিতে দারুল উলুম মাদ্রাসায় পড়াশোনার পর পরিবারসহ সৌদি আরব পাড়ি দেয়। সেখানে শিক্ষকতা শুরু করে তার বাবা। এরপর এক বিত্তশালী পরিবারের নজরে আসে আতাউল্লাহ। সেই পরিবারের সন্তানদের পড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয় তাকে।

পরে সৌদি আরব থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে পাকিস্তানে ফিরে যায় আতাউল্লাহ। এরপর রাখাইন গিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ায়। গড়ে তোলে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন। সেখান থেকেই তীব্র লড়াই চালিয়ে যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। অবশেষে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে ৫ সহযোগীসহ র‌্যাবের জালে ধরা পড়েন এ আতাউল্লাহ। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) তাঁদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে নেওয়া হয়। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক দুই মামলায় তাদের ৫ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তবে তিনি কীভাবে মিয়ানমার থেকে নারায়ণগঞ্জ আসলেন সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।