
বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নে সরকারি খালের পানি নিতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বিএনপির এক কর্মীকে টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেকটা বাধ্য হয়েই টাকার বিনিময়ে কৃষকরা খাল থেকে পানি নিয়ে ক্ষেতে সেচ দেন।
সরেজমিনে জানা যায়, তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নে ছোট আমখোলা, বড় আমখোলা ও কবিরাজপাড়া একটি খাল আমখোলা। এই খালে পানি ওঠানামার জন্য একটি স্লুইসগেট রয়েছে। ওই খালে ৩-৪ মাস লবণ পানি ওঠানামা করে। স্লুইসগেট বন্ধের ঝাপ নেই। কৃষক মিলে মিষ্টি পানি রাখার জন্য কাঠ কিনে ঝাঁপ তৈরি করে স্লুইসগেট বন্ধ রাখে ও পাশের একটি খালের সঙ্গে সংযোগ করে দেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি মজিবুর রহমান ও বিএনপির কর্মী কবির ঘরামী তিনটি গ্রামের সব কৃষকের (৫০০ লোক) তালিকা করেন। যারা তরমুজ চাষ করে, তাদের কানিপ্রতি ৪ হাজার এবং ধানচাষিদের কানিপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা করে ধার্য করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা। এ বিষয়ে এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে জয়নাল সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
স্থানীয় কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, আমি খাল থেকে মোটর দিয়ে পানি উঠাইতে গেছিলাম। তারপর কবির ঘরামী আর মজিবুর রহমান এসে আমার মোটর নিয়ে যায়। আমাকে পানি নিতে দেয়নি। স্থানীয় কৃষক মহারাজ বলেন, আমার কাছ থেকে তারা ১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছে। টাকা না দিলে তারা পানি দেয় না। আওয়ামী লীগ ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই টাকা আদায় করছি। আমরা নিজস্ব টাকা দিয়ে খাল কেটেছি।
কবির ঘরামী বলেন, আমাদের ওই খালে ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাই আমরা কৃষকদের থেকে টাকা তুলছি। ৭নং সোনাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস ফরাজী বলেন, আমি বলেছি, তোমরা একটি কমিটি গঠন করে ওখানে মিষ্টি পানি আটকানোর জন্য যে কয় টাকা খরচ হয়, সবাই মিলে দেবে। সেখানে যে অতিরিক্ত টাকা তুলছে, আমি এ বিষয়ে জানি না।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, আমি টাকা উত্তোলনের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।