Image description

সাবেক স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার সীমার সঙ্গে প্রেম করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ইসমাইল হোসেন অভি ও তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাজকীর আহম্মেদকে হত্যা করেন। সীমার মোবাইল থেকে অভি ম্যাসেজ দিয়ে তাজকীরকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে খুলনায় ডেকে আনে। পরে অভি ও তার তিন বন্ধু মিলে তাজকীরের হাত-পা বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে ও গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। পরে মরদেহ বস্তায় ভরে ভৈরব নদীতে ফেলে দেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভৈরব নদী থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সীমাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অভি পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

আজ সোমবার দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডেপুটি কমিশনার এম এম শাকিলুজ্জামান। 

 
 

ডেপুটি কমিশনার জানান, ৩ বছর আগে পরিবারের অমতে সীমার সঙ্গে ইসমাইল হোসেন অভির বিয়ে হয়। পরবর্তীতে তাদের ডিভোর্স হয় এবং অভি দেশের বাইরে চলে যান। এ সময় তাজকীরের সঙ্গে সীমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ডিভোর্সের ৭-৮ মাস পর অভি দেশে ফিরে এসে সাবেক স্ত্রী সীমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং তাদের মধ্যে পুনরায় সম্পর্ক তৈরি হয়। 

এ সময় ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়, যা একমাত্র সীমা জানতো। সীমা একই সঙ্গে দুটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দুই প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে, যাতে কেউই বিষয়টি বুঝতে না পারে। অভি আর সীমার নতুন করে সম্পর্কের বিষয়টি তাদের উভয় পরিবারের লোকজন জানলেও তাজকীরের সঙ্গে প্রেমের বিষয়টি অপ্রকাশ্যে থেকে যায়। 
কিন্তু ঘটনা পরিক্রমায় সীমার সঙ্গে তাজকীরের প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে যান অভি। এটা নিয়ে সীমা এবং অভির মধ্যে ঝগড়া হতে থাকে। অভি তাজকীরকে শায়েস্তা করার ফন্দি আঁটেন। এবং সীমার ব্যবহৃত গোপন মোবাইল ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাজকীরকে খুলনায় আসতে বলেন।
 
তাজকীর খুলনা এলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অভি তার বন্ধুদের সহায়তায় তাকে অপহরণ করে নিজ বাসায় নিয়ে যান। অভিসহ চারজন মিলে তাজকীরকে হত্যা করেন। এরপর তারা ডাকবাংলো এলাকা থেকে ১০০ টাকা দিয়ে বস্তা কিনে লাশ তাতে ভরে ইজিবাইকে করে ভোর রাতে হার্ডবোর্ড খেয়া ঘাটে নিয়ে যান। সেখান থেকে আগেই ভাড়া করে রাখা ট্রলারযোগে দৌলতপুর যাওয়ার দিকে নদীর মাঝখানে নিয়ে লাশ ফেলে দেন।

এর আগে গ্রেপ্তার সীমা, লাবণী ও সাহিদ কারাগারে রয়েছেন। সাহিদ হত্যার পর লাশ বহনের কাজে ব্যবহার করা ইজিবাইকচালক। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত অভি’র বন্ধু মশিউর রহমান জিতু ও রিয়াদ কাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মূল আসামি ইসমাইল হোসেন অভিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

ডেপুটি কমিশনার বলেন, তাজকীর হত্যার নৃশংসতা যেন সিনেমাকেও হার মানিয়েছে।