Image description
 

ইসলামে কিছু কাজ রয়েছে, যা বৈধ হলেও নিন্দনীয় এবং ইসলামী নীতির সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই কাজগুলি সাধারণত করা যেতে পারে, তবে এগুলোর মাধ্যমে জীবনযাপন করা আদর্শ নয় এবং মুসলিম সমাজে এসব কাজকে নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য মনে করা হয় না। নিচে যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন ভিক্ষাবৃত্তি, ঋণগ্রহণ, এবং বিবাহবিচ্ছেদ, এসব বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

১. ভিক্ষাবৃত্তি:
ভিক্ষাবৃত্তি ইসলামে সাধারণভাবে বৈধ নয়, তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে। ইসলাম মানুষের জন্য নিজস্ব উপার্জনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানজনক হিসেবে গণ্য করে। ইসলাম শ্রমের মাধ্যমে জীবিকা অর্জনকে উৎসাহিত করে। তবে যদি কেউ সত্যিকারভাবে দরিদ্র, অসুস্থ বা অক্ষম হয়, তখন তাকে সাহায্য করা যেতে পারে।
ইসলাম কাজের মাধ্যমে উপার্জন করার প্রতি গুরুত্ব দেয়। ভিক্ষা গ্রহণ একজন ব্যক্তির আত্মসম্মান এবং মর্যাদার পরিপন্থী হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তি উপার্জনের অন্য কোনো উপায় না পায়, তখন তার জন্য সাহায্য নেওয়া বৈধ। তবে, এটি নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হওয়া উচিত নয়।

২. ঋণগ্রহণ:
ঋণ গ্রহণ ইসলামে বৈধ, তবে এটি একান্তই প্রয়োজনীয় সময়ে এবং সুদবিহীন (রিবা মুক্ত) হতে হবে। ইসলাম ঋণ গ্রহণকে অনুমোদন করে যদি তা জরুরি পরিস্থিতিতে অর্থের অভাবে হয়ে থাকে। তবে, ঋণ গ্রহণের কিছু বিষয় ইসলামে নিন্দনীয় হতে পারে। যদি ঋণের উদ্দেশ্য বিলাসিতা, অপ্রয়োজনীয় খরচ বা অপব্যয় হয়, তা নিন্দনীয়। সুদ বা রিবার (অত্যধিক সুদ) সাথে ঋণ গ্রহণ ইসলামে হারাম। ইসলামে ঋণ শোধ করতে বাধ্য করা হয় এবং ঋণ শোধে অবহেলা বা অনীহা করা হারাম। এ কারণে, ঋণ গ্রহণ তখনই বৈধ যখন এটি সত্যিকার প্রয়োজনীয় এবং সুদ মুক্ত হয়, এবং ঋণ শোধে অবহেলা না করা উচিত।

 

৩. বিবাহবিচ্ছেদ (তালাক):
বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক ইসলামে বৈধ, তবে এটি সবচেয়ে নিন্দনীয় কাজ হিসেবে গণ্য হয় যদি না এটি অত্যন্ত জরুরি পরিস্থিতিতে হয়। ইসলাম বিবাহকে একটি পবিত্র এবং স্থায়ী সম্পর্ক হিসেবে ধারণ করে, এবং যতটা সম্ভব তালাক থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করে। তালাক তখনই দেওয়া উচিত যখন সব ধরনের চেষ্টা এবং মধ্যস্থতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না হয়। যদি কোনো ব্যক্তি ক্ষোভ বা আবেগের ভিত্তিতে তালাক দেয়, তা নিন্দনীয়। তালাক একটি গুরুতর সিদ্ধান্ত এবং এটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে, প্রয়োজনীয় কারণে এবং সমস্ত প্রচেষ্টা শেষে গ্রহণ করা উচিত।

 

এগুলো তিনটি কাজ ইসলামে বৈধ হলেও, সেগুলো নিন্দনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য। ইসলামি নীতির আলোকে এগুলো সতর্কতার সাথে এবং প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে করা যেতে পারে, তবে সব সময় এগুলোর প্রতি সতর্ক মনোভাব পোষণ করা উচিত।