
ইসলামের খাদ্য বিধির মধ্যে ঘোড়ার গোশত খাওয়া নিয়ে একটি সাধারণ বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকেই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হন যে, ঘোড়ার গোশত হালাল নাকি হারাম? ইসলামি খাদ্য বিধি অনুসারে, ঘোড়ার গোশত সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
ইসলামের ইতিহাসে ঘোড়ার ব্যবহারের রয়েছে ব্যাপক। তবে ঘোড়ার গোশত খাওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে ইসলামী আলেমদের মধ্যে। ইসলামি স্কলারদের মধ্যে এই বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। কারণ রাসুল (স.)-এর হাদিসে ঘোড়ার গোশত খাওয়া নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।
হজরত জাবের (রা.) এক হাদিসে উল্লেখ করেছেন, খায়বারের যুদ্ধে রাসুল (স.) ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দেন। তবে এটি বিশেষ করে যুদ্ধের সময় খাবারের সংকট মেটাতে দেওয়ার জন্য ছিল। (বুখারি: ৫৫২০)
অপরদিকে, হজরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)-এর একটি হাদিসে বলা হয়েছে, রাসুল (স.) ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন (নাসায়ি: ৮/২০৬, আবু দাউদ: ২/৫৩১)।
এই দুটি হাদিসের মধ্যে বৈপরীত্য থাকায় আলেমরা ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন। একদল আলেম ঘোড়ার গোশত খাওয়াকে বৈধ বলে অভিহিত করেছেন। বিশেষত যুদ্ধকালীন সময়ে, তবে অন্যরা এটিকে অবৈধ বা মাকরুহ (তানজিহি) বলে মন্তব্য করেছেন।
ফিকহশাস্ত্রের মতে, যখন একটি বিষয়ে পরস্পরবিরোধী হাদিস পাওয়া যায়। তখন সাধারণত অবৈধতার দিক গ্রহণ করা হয়, যাতে সতর্কতা বজায় থাকে। এ কারণে, ঘোড়ার গোশত খাওয়ার ক্ষেত্রে মাকরুহ বা অযাচিত বলা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় যে, ঘোড়া জিহাদে ব্যবহৃত প্রাণী, এবং যদি ব্যাপকভাবে এর গোশত খাওয়া শুরু হয়, তবে জিহাদ বা যুদ্ধের কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
যদিও বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে ঘোড়ার ব্যবহার ব্যাপক হারে নেই। তবে প্রতিরক্ষা বিভাগের কিছু অংশে ঘোড়ার রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ এখনও চলে আসছে।