
বগুড়ার গাবতলীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার সপ্তম শ্রেণির স্কুলছাত্র সিফাত হোসেনের (১৩) শরীরে স্পামের অস্তিত্ব পাওয়ায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসীর ধারণা, বলাৎকারের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে গ্রেফতার তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) এমরান হোসেন হাবু তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।
তবে পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও গ্রেফতার আসামির স্বীকারোক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, নিহত সিফাত হোসেন বগুড়ার গাবতলী উপজেলার উঞ্চুরখী উত্তরপাড়া গ্রামের হাফিজার রহমান মোল্লার ছেলে। সে গাবতলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। রোজাদার সিফাত গত শনিবার গ্রামের মসজিদে ইফতার করার পর বাড়িতে আসে। এরপর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে বাড়ির কাছে প্রতিবেশী মন্তেজার প্রামাণিকের ছেলে এমরান হোসেন হাবুর (৪৫) বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। গ্রামবাসী হত্যায় জড়িত সন্দেহ হিজড়া হাবুকে আটক করে মারপিট করলে সে পালিয়ে যায়। গাবতলী থানা পুলিশ তাকে হাসপাতাল থেকে আটক করে।
এদিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, নিহত স্কুলছাত্র সিফাত হোসেনের শরীরে স্পামের (বীর্য) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। শিশু সিফাত বলাৎকারের ঘটনায় হত্যার শিকার হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে তদন্ত কাজ শেষ হতে হবে।
গাবতলী থানার ওসি আশিক ইকবাল জানান, নিহত শিশু সিফাতের বাবা হাফিজার মোল্লা থানায় প্রতিবেশী এমরান হোসেন হাবু, তার বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে শ্বাসরোধে হত্যা মামলা করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাবু ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়েছে। সে দাবি করছে, সিফাত তার বাড়িতে গিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এরপর সে লাশটি বাড়ির বাহিরে এনে রেখেছে।
শিশু সিফাতকে বলাৎকারের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এসব ব্যাপারকে সামনে রেখে তদন্ত চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবুকে সোমবার দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে স্কুলছাত্র সিফাত হত্যারহস্য উন্মোচিত হবে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।