Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নারী শিক্ষার্থীকে ‘পর্দা না করা’ নিয়ে হেনস্তাকারী মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে জামিন দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এবং চাকরিতে বহাল করলে ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাবির ১০ বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে এবং অভিযুক্তের পক্ষে নানাভাবে মব উসকানোর মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে শিক্ষার্থীরা এ বিবৃতি দেয়।

রাত সাড়ে ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আইন, সমাজবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান,ম্যানেজমেন্ট, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি, অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, বুধবার (৫ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফ অর্ণব ঢাবি ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ কথা বলে হেনস্তা করে। পরে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তাকে শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে গেলে সে এ ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী মামলা দায়ের করে অভিযুক্তকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে এবং অভিযুক্তের পক্ষে নানাভাবে মব উসকানো শুরু হয়।

রাত ১টায় ‘বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন’ নামের সংগঠন ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে শাহবাগ থানায় মব সৃষ্টি করে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করে। এ সময় ভুক্তভোগীকে উপস্থিত মব ‘শাহবাগী’, ‘প্রস্টিটিউট’ আখ্যা দেয়, এ ছাড়া গণমাধ্যমের সামনে অভিযুক্ত ভিকটিমের শারীরিক অবয়ব নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের (২০০০) আওতায় হওয়া মামলার এজাহার পাবলিক নথি নয়। কিন্তু দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মবের হাতে বিক্ষুব্ধদের হাতে মামলার এজাহার তুলে দেয়। যার ফলে ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি আবারও হেনস্তার শিকার হন।

শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে যথাযথ তথ্যপ্রমাণ ও স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে উক্ত ব্যক্তির স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তরফ থেকে কোনোভাবে চাকরিতে বহাল রাখার চেষ্টা করা হলে তাঁরা অবিলম্বে সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন তাঁরা।