
টাঙ্গাইলের সখীপুরে দুই শিক্ষক দম্পতির যমজ চার কন্যা শিক্ষাক্ষেত্রে ধারাবাহিক সাফল্যে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। চার কন্যার মধ্যে যমজ যারীন তাসনিম বুয়েটে এবং যাহরা তাসনিম মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। অপর যমজ বোন সাদিয়া জাহান শাহানা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ও সামিয়া জাহান আফসানা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। দুই শিক্ষক দম্পতির এই চার যমজ কন্যারা ছোটবেলা থেকেই বেশ মেধাবী। চার জনই পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
উপজেলার কচুয়া গ্রামের বাসিন্দা সূর্য তরুণ আবাসিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষক আবু জুয়েল সবুজ ও গজারিয়া শান্তিকুঞ্জ একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক চায়না আক্তার দম্পতির যমজ কন্যাসন্তান যারীন তাসনিম এবার বুয়েটে (ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং যাহরা তাসনীম টাঙ্গাইল মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এর আগে তারা এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকার হলিক্রস কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
যারীন ও যাহরার মা চায়না আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকেই যারীন তাসনিম ইঞ্জিনিয়ারিং ও যাহরা তাসনিম ডাক্তার হতে চেয়েছিল। আল্লাহর ইচ্ছা ও মেয়েদের চেষ্টা-পরিশ্রমে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।
অন্যদিকে, সখীপুর পৌরশহরের বাসিন্দা আল আমিন ও আফিয়া আক্তার দম্পতির যমজ কন্যাসন্তান সামিয়া জাহান আফসানা এবং সাদিয়া জাহান শাহানা এইচএসসি পরীক্ষায় টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। দুই বোনই সখীপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। আল আমিন বলেন, দুই মেয়ের ধারাবাহিক সাফল্যে আমরা আনন্দিত। প্রতিবেশীরাও মেয়েদের সাধুবাদ জানাচ্ছেন। ওদেরও ইচ্ছা ছিল চিকিত্সক হয়ে মানুষের সেবা করার। তারা এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে সুযোগ পেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দুই কন্যার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। দুজনই দুটি মেডিক্যাল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তিনি বলেন, ওরা রাতে না ঘুমিয়ে পড়াশোনা করেছে। কোনো গাইড বই নয়, মূল বই পড়ার কারণে তাদের এই সফলতা।
উল্লেখ্য, আফসানা ও শাহানার বাবা আল-আমিন উপজেলার বড়চওনা-কুতুবপুর (বিকে) কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তাদের মা আফিয়া আক্তার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এ বিষয়ে সখীপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, উপজেলার দুই শিক্ষক দম্পতির চার জমজ কন্যাদের এমন সাফল্য কাঁকতালীয় কোনো বিষয় নয়। এটি সম্ভব হয়েছে তাদের প্রবল ইচ্ছা, চেষ্টা ও দৃঢ় অধ্যাবসায়ের কারণে। শিক্ষক হিসেবে আমি তাদের সফলতা কামনা করছি। শাহানা ও আফসানা বলেন, কঠোর পরিশ্রম ও মূল বই পড়ার কারণে আমরা ভালো ফলাফল করতে পেরেছি।