
সাত কলেজ পরিচালনায় একটি স্বতন্ত্র কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে, নাম দেওয়া হয়েছে ‘নজরদারি সংস্থা’। এর দায়িত্বে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একজন সদস্য। সাত কলেজের একজন অধ্যক্ষ সংস্থাটির পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন। অন্তর্বর্তী প্রশাসন হিসেবে এই কাঠামোতে চলবে সাত কলেজ। এই লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস থেকে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের সব ধরনের কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে দ্রুত ঢাবির সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ঢাবি উপাচার্য বরাবর পাঠানো হয়েছে। সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার আগ পর্যন্ত এ কাঠামো অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
রাজধানীর সরকারি সাতটি কলেজ হলো—ঢাকা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। নজরদারি সংস্থায় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির রেজিস্ট্রার দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, অর্থ ও হিসাব সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখার মনোনীত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সাত কলেজের অনলাইন ভর্তি কমিটির মাধ্যমে আবেদন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এসব কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এই কাঠামো বলে জানিয়েছে সরকার।
জানা গেছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ইউজিসি থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ইউজিসির প্রস্তাবনা অনুযায়ী এ নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রশাসনিক জটিলতা ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে। সাত কলেজ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অধিভুক্ত সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন হতে সুপারিশ করা হলো।
ইউজিসি জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ব্যবস্থাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ পর্ষদে (একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট) জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদিত হতে হবে; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি সংক্রান্ত দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব বিভাগ প্রস্তাবিত কাঠামোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনায় প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ আট বছর পর গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে মুক্তি পায় ঢাকার সাত সরকারি কলেজ। অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তের পর প্রশ্ন উঠেছিল, সাত কলেজের চলমান শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের কী হবে? কীভাবে চলবে কলেজগুলোর পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রম। অবশেষে নজরদারি সংস্থা করার সিদ্ধান্ত আসলো শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে।