
ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু। তিনি একসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবেও পরিচিত ছিলেন বলে জানা যায়। তার এই নিয়োগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
গতকাল রবিবার (২ মার্চ) ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়। আদেশ অনুযায়ী, মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) হিসেবে ঢাকা রেঞ্জের আদেশ অনুসারে আশুলিয়া থানার নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে, নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু মনিরুল হক ডাবলুর প্রশংসা করে একটি প্রত্যায়নপত্র দেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির হয়ে দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
তবে আশুলিয়ার মতো স্পর্শকাতর একটি থানায় একজন রাজনৈতিক অতীত থাকা ব্যক্তিকে ওসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্র-জনতার প্রসঙ্গ টেনে অনেকেই লিখছেন, এখানে এমন একজন ওসির নিয়োগ তদন্ত প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আইন বিভাগের সাবেক ছাত্র সাইয়েদ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে লিখেছেন, ২০২২ সালে যার জন্য আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য প্রত্যায়ন দিয়েছিলেন যে তিনি শেখ হাসিনার একজন নির্ভীক কর্মী, সেই মনিরুল হক ডাবলুকে আশুলিয়া থানার ওসি করা হলো! আশুলিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা, যেখানে পুলিশের হাতে বহু ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়। এই নিয়োগ কি সেই তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা?
তিনি আরও লেখেন, আশুলিয়ার আগের ওসিও বিতর্কিত ছিলেন, তাকে কয়েকদিন আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার জায়গায় একজন সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিকে বসানো হলো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কীভাবে এই নিয়োগ দিল? এভাবেই কি সরকারের নতুন বন্দোবস্ত চলছে? ঘটনাটি বড় লজ্জার!
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা মামুন খান লিখেছেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা এখন থানার ওসি হচ্ছে। দারুণ সংস্কার চলছে।
ঢাকার পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, একজন পেশাদার কর্মকর্তা হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের যাচাই-বাছাই করে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অন্য কোন কারণে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।