![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/db77fe4138d0755ffeedf7c4a3b82c20.webp)
নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী অক্টোবরের আগেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনায় অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় যাচ্ছে ইসির কারিগরি টিম। চলতি মাসেই অস্ট্রেলিয়া ও এপ্রিলে কানাডায় শুরু হবে এ কার্যক্রম। ইসির উপসচিব মো. মাজহারুল ইসলাম এ-সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় দুটি টিম নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ ছাড়া কানাডায় দুটি টিম কাজ করবে আগামী ৫ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত।
অন্যদিকে, প্রবাসীদের ভোটার করার বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব প্রবাসীকে ভোটার তালিকায় এবং এনআইডি সার্ভারে নিবন্ধন করতে বেশ সময় লেগে যেতে পারে। এমতাবস্থায় ডিসেম্বর ২০২৫-এ আগামী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে অক্টোবর ২০২৫-এর মধ্যে যেসব প্রবাসীকে ভোটার তালিকায় ও এনআইডি সার্ভারে নিবন্ধন করা সম্ভব হবে তাদের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে প্রস্তাবিত পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে। এদিকে নির্বাচন কমিশন ১৬টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের নির্বাচনি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি পেয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, জর্ডান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপ এবং কানাডা। তবে নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত কেবল সাতটি দেশে আংশিকভাবে ট্রায়ালটি পরিচালিত হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত এবং কাতার। এই সাতটি দেশে মোট ৩৪ হাজার ৭৪৮ জন প্রবাসী তালিকা ভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন, যার মধ্যে ১৩ হাজার ১৮২ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং ৮ হাজার ৭৯৬টি এনআইডি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ হাজার ২০৮টি আবেদনের যাচাইকরণ প্র?িয়া চলমান থাকায় এই আবেদনগুলো অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এর আগে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এর পর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এ ছাড়া ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এর পর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়। সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এর পর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা। এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন সেই উদ্যোগকে আরও সম্প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রবাসীদের আলাদা এনআইডি গাইডলাইনের কথা ভাবছে ইসি : প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা সংশ্লিষ্ট দেশে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও নেই কোনো গাইডলাইন। ফলে কেবল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তের আলোকেই চলছে কার্যক্রম। এতে হাজার হাজার প্রবাসী এনআইডি সংশোধনসহ সেবা গ্রহণে পড়ছেন ভোগান্তিতে। তাই সেবা কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে এবার গাইডলাইন করার কথা ভাবছে সংস্থাটি। ইসি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে সাতটি দেশের প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশেই এনআইডি সেবা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের আধিক্য রয়েছে এমন মোট ৪০টি দেশে কার্যক্রমটির বিস্তার করার পরিকল্পনা করছে। তবে কোনো গাইডলাইন না থাকায় সেবা কার্যক্রমের পুরো সুবিধা পাচ্ছেন না নাগরিকরা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকেও কর্মকর্তারা কমিশনের কাছে পৃথক গাইডলাইনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। কর্মকর্তারা এতে বিদেশে দূতাবাসগুলোতে এনআইডির জন্য লোকবল নিয়োগ, সেবা চার্জ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।