Image description

মির্জা গালিব  (Mirza Galib)

 
এক,
আওয়ামীলীগের ফ্যসিবাদী রাজনীতির পিছনে তাদের রাজনৈতিক প্লাটফরমের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক প্লাটফরমেরও বিশাল ভূমিকা আছে। এই সাংস্কৃতিক প্লাটফরম অন্তর্গত চরিত্রের দিক থেকে শহুরে এলিট, রেইসিস্ট, ইস্লামোফোবিক, এবং নির্লজ্জ রকম দলকানা এক্সট্রিমিস্ট। কোন রকম দ্বিধা বাদেই এরা ইসলামকে প্রগতি বিরোধী পুরাতন বিশ্বাস হিসেবে দেখে আর ইসলামের বাইরে অন্য যে কোন ধর্মকে (বিশেষ করে হিন্দু ধর্মকে) ইন্টারেস্টিং কালচার হিসেবে দেখে। এদের কাছে ইসলাম বাদে আর সবকিছুই বৈচিত্রের অংশ। ইসলামপ্রিয় জনগোষ্ঠীর কালেক্টিভ আকাঙ্ক্ষার বহিপ্রকাশকে "মব" বা "প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদীতার" বাইরে আর কোন রাজনৈতিক অর্থে দেখার চোখ নাই তাদের। বাংলাদেশে ইস্লামোফোবিক শহুরে কালচার তৈরিতে এদের অবদান সবচাইতে বেশি।
 
দুই,
জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়া আওয়ামীলীগের রাজনীতি আপাতত নাই হয়ে গেছে। কিন্তু এই ইস্লামোফোবিক কালচারাল এসটাবলিশমেন্ট কিন্তু আছে। এদের টার্গেট হইল আওয়ামী বিরোধী, ভারত বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে "মৌলবাদী" হিসেবে ট্যাগ করা। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত তৈরি করে "সন্ত্রাসের বিপক্ষে অনন্ত যুদ্ধের" ওয়েস্ট কে দলে ভিড়ানো, আর তাদের অংশ হিসেবে ভারতের আধিপত্যকে আবার ডেকে আনা।
 
তিন,
প্রশ্ন হচ্ছে এদের মোকাবিলার উপায় কি? পাব্লিক স্পেইসে যদি এদেরকে মোকাবিলা করা না হয়, তাইলে ইস্লামোফোবিক পাটাতন ভাঙবে না। আবার মোকাবিলা করতে গেলে যে কেওয়াস হবে, সেইটারে এরা কাজে লাগাবে "মৌলবাদী" বানানোর প্রপাগান্ডায়। এইটা একটা উভয় সঙ্কট। এইখানে স্ট্রাটেজিক হইতে হবে, ধৈর্য আর প্রজ্ঞার সাথে এক্টিভিজম করতে হবে। কিছুটা সিলেক্টিভও হইতে হবে।
 
চার,
যেমন, কোন একটা বিজনেজ হাউস একটা এড বানাইল যেইটা ইস্লামোফোবিক। এখন হুট কইরা ওই বিজনেজ হাউস ভাইঙ্গা না ফেইলা, বেটার স্ট্রাটেজি হইল ওই এডের সমালোচনা করা আর তাদের পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া। বিশাল সংখ্যক মানুষ পণ্য বর্জন করলে কোন বিজনেজ হাউসই এই রিস্ক নেবে না। একই ভাবে কেউ যদি ইসলাম বিরোধী কিছু লেখে, তার বই বর্জন করা, প্রয়োজনে নিষিদ্ধ করার জন্য বাংলা একাডেমি বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবী করা হইল বেটার অপশান। মনে রাখতে হবে, এই দেশে তৌহিদী জনতাই বেশী। জনগণের পার্টিসিপেশানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই আমরা আমাদের দাবী আদায় করতে পারব। ইস্লামোফোবিক গোষ্ঠীকে যেমন তাদের হেজিমনি চালাইতে দেয়া যাবে না, একই সাথে খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন আমাদের ভুলের সুযোগও নিতে না পারে।
 
পাঁচ,
আর দীর্ঘ মেয়াদে নিজেদের যোগ্যতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নাই। ইসলামপন্থী লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বিজ্ঞানী, এবং ইজতিহাদ করার যোগ্যতা সম্পন্ন আলেম তৈরির মাধ্যমে একটা রেনেসা লাগবে আমাদের। এই রেনেসার উপর ভর করে একটা আধুনিক, গণঅংশীদারী বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি দাড় করাতে পারলে আমরা আমাদের মঞ্জিলে পৌছতে পারব।