Image description
 

বাংলাদেশি বাবা মাসুদুর রহমান ও জাপানি মা মাতসুশিমা তমোমির একমাত্র মেয়ে মাতসুশিমা সুমাইয়া। জন্ম জাপানে। তবে ফুটবলের টানে অনেক আগেই বাংলাদেশে আসা। বছর দুই আগে লাল-সবুজ দলের ক্যাম্পে জায়গা করে নেন। এরপর থেকে ২৩ বছর বয়সী উইংগারের আবাসস্থল বাফুফে ভবন। সেখানে থেকেই জাতীয় দলের হয়ে অনুশীলন করছেন… খেলছেন।

 

সম্প্রতি পিটার বাটলারকে আবারও বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ করে আনায় বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন ফুটবলাররা। তারা ম্যাচ ও অনুশীলন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সাফজয়ী দলের অন্যতম খেলোয়াড় জাপানি বংশোদ্ভূত মাতসুশিমা সুমাইয়াকে বেশ কিছু দিন ধরেই ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে এক ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন তিনি। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন জাপানে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা এই নারী ফুটবলার। মূলত কোচ পিটার বাটলারের অপসারণ চেয়ে বাফুফে সভাপতি বরাবর ইংরেজি চিঠি লেখার কারণেই এমন আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তিনি।

 

হুমকি দেওয়াসহ নারী ফুটবলারদের আন্দোলনের বিষয়গুলো নিয়ে সমকালের সঙ্গে মন খুলে কথা বলেছেন মাতসুশিমা সুমাইয়া। সেখানেই সুমাইয়া জানান, তার বাংলাদেশি বাবা মাসুদুর রহমান চাননি মেয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াক। কিন্তু জাপানি মা মাতসুশিমা তমোমির সঙ্গে গোপনে বাংলাদেশের পাসপোর্ট করেন মাতসুশিমা সুমাইয়া। দুই বছর আগে বসুন্ধরা কিংসের ট্রায়ালে টিকে যাওয়া জাপানপ্রবাসী এই নারী ফুটবলার এখন জাতীয় দলের অন্যতম তারকা।


 

সমকালকে সুমাইয়া বলেন, আমার বাবার সঙ্গে ফাইট করে বসুন্ধরা কিংসে ট্রায়াল দিয়েছিলাম। সে সময় তিনি বলেছিলেন, তুমি এখানে (বাংলাদেশ) খেল না, এখানে খেললে ভালো হবে না। তুমি বিদেশে খেল। বাংলাদেশে তোমাকে কিন্তু খেলতে দেবে না। কিন্তু আমি আমার মায়ের সঙ্গে লুকিয়ে পাসপোর্ট বানাই। কিংসে ট্রায়ালে টেকার পর মালদ্বীপেও লিগ খেলেছি। এখন আমার নামে কত উল্টাপাল্টা লেখা হচ্ছে। পারফরম্যান্স না থাকা সত্ত্বেও আমাকে নাকি টিমে রাখা হয়েছে সাবিনা খাতুনের জন্য। আমার যদি পারফরম্যান্স না থাকত, তাহলে কোচ (পিটার বাটলার) বাদ দেওয়ার তালিকায় আমার নাম রাখতেন।


 

সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকির ব্যাপারে পরিবার থেকেও সাপোর্ট পাচ্ছেন সুমাইয়া। জাতীয় দলের তারকা এই ফুটবলার জানান, আমার মা সব সময় আমাকে সাপোর্ট দেন। প্রথমে আমার বাবা অনেক ভয় পেয়েছিলেন, আমি বাংলাদেশে খেলব, সবাই চিনবে আর এই চেনাই ছিল তার ভয়ের কারণ। পাবলিক ফিগার হওয়া একটা ঝুঁকিরও বিষয় আছে। সবাই আপনাকে রাস্তায় দেখবে। এখন আমি যে বাইরে যাব, সেই নিরাপত্তা নেই। কারণ আমি খোলামেলা হুমকি পাচ্ছি, সেখানে কেউ কোনো প্রতিবাদ করছে না। শুধু আমাকেই নয়, অনেককেই হুমকি দিচ্ছে। সেগুলোর ভয়ে আমি সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছি। এ জন্য একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি, যেটা কেবল আমিই সাহস করে দিয়েছি।