রাজধানীর হাতিরঝিলে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির মাঝে পড়ে পেটে গুলিবিদ্ধ হন জিলানী নামের এক পথচারী। এর আগে বৃহস্পতিবার আদাবরে আধিপত্যের জেরে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে সুমন শেখ (২৬) নামে একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। একই এলাকায় বাসার লকার ভেঙে ৪৫ ভরি স্বর্ণ লুটের ঘটনা ঘটে। ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিদিন এমন নানা অপরাধের ঘটনা ঘটে চলেছে, যেগুলোর সঙ্গে জড়িত উঠতি বয়সিরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। মাদকের কারবার, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি এমনকি হত্যার মতো সহিংস কর্মকাণ্ডে ওরা জড়িত। প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংগুলোর মধ্যে আধিপত্যের লড়াই স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আর এসবের মাঝে পড়ে হতাহত হচ্ছেন সাধারণ মানুষও। আবার নানা সামাজিক প্লাটফর্মে সাইবার অপরাধেও জড়াচ্ছে কিশোর অপরাধীরা।
ঢাকা ছাড়াও সারা দেশে অনেক জেলা, উপজেলা এবং প্রত্যন্ত এলাকায়ও এমন কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রবের তথ্য পেয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। বাংলাদেশে এই কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য শুরু হয় ১৯৯০ সালের দিকে। সন্ত্রাসী বড় ভাইদের গ্রুপ ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দিন দিন তা বেড়েছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তারা আরও ব্যাপক কলেবরে ডালপালা মেলেছে। আর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকটা নিষ্ক্রিয়তার ফাঁকে এই অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সারা দেশে ২৩৭টির মতো কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ১২৭টি গ্রুপ সক্রিয়। সরকার পতনের আগে ঢাকায় এসব গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৮২। এখন ঢাকার প্রতিটি থানা এলাকায় ৫০০ থেকে ১ হাজার সদস্য রয়েছে। আর চট্টগ্রামে ৫৭টি কিশোর গ্যাংয়ে রয়েছে ৩১৬ সদস্য।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আদাবরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আধিপত্যের জেরে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে সুমন শেখ (২৬) নামে একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাকারিয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আনোয়ার ও জনি নামে দুটি কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য বিস্তারের জেরে এই ঘটনা ঘটে। আহত সুমন আনোয়ার গ্রুপের সদস্য। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
এর আগে একই থানার মেহেদীবাগ এলাকায় এক তরুণীকে উত্ত্যক্ত করছিল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। একপর্যায়ে মেয়েটিকে প্রকাশ্যে মারধর করে তারা। এমনকি তরুণীর অভিভাবককে হত্যার হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদাও দাবি করে। পরিবারের আতঙ্কিত সদস্যরা কিছুদিন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন। পরে পুলিশের নিরাপত্তার আশ্বাসে তারা ফিরে আসেন। এরপর ওই কিশোর গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। তবে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে মোহাম্মদপুরের অন্যতম আলোচিত কিশোর গ্যাং সদস্য ও কব্জি কাটা আনোয়ার গ্রুপের সদস্য রবিন ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন ওমর ফারুক সানি নামের এক যুবক। পল্লবীর বাউনিয়াবাঁধ এলাকার এই বাসিন্দা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, স্থানীয় জাহিদসহ সাত-আট জন তাকে মারধর করে।
অভিযোগকারী সানি শুক্রবার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পল্লবীর সাংবাদিক প্লট এলাকায় দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য জাহিদ ও আশিকের সঙ্গে আমার বড় ভাইয়ের আগে থেকেই বিরোধ ছিল। থানায় মামলাও হয়েছে। ওই ঘটনার জের ধরেই আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্লবী থানার এসআই সানোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। হামলাকারীদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি রাতে আদাবরে ১৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় লকার ভেঙে ৪৫ ভরি স্বর্ণ লুটের ঘটনায় দুই কিশোরকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন কিশোর-তরুণ জড়িত থাকার তথ্য থাকলেও এখনও ধরা পড়েনি তারা।
গত ১৬ জানুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় এক পথশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রায়হান নামের এক তরুণকে আটক করে পুলিশ।
শুধু আদাবর বা পল্লবী নয়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরসহ অনেক এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বাড়বাড়ন্ত দৌরাত্ম্য রয়েছে।
পুলিশের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ঢাকার মধ্যে আদাবর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি। এ দুটি স্থানে একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের প্রায় দুই হাজার সদস্য রয়েছে। আদাবর এলাকার আলিফ হাউজিং, শ্যামলী হাউজিং, শেখের টেক ও ঢাকা উদ্যান এলাকার সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে এদের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
এ ছাড়া মিরপুর, উত্তরা, পুরান ঢাকার বিভিন্ন মহল্লা, ডেমরাসহ রাজধানীর ৫০টি থানা এলাকায় কিশোর-তরুণ গ্যাংয়ের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আগের চেয়ে বেড়েছে।
অপরাধ-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার ও সংশোধন প্রক্রিয়া চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এর বাইরে। রাজনৈতিক দলগুলোও এক ধরনের সংশোধন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সে সুবাদে কিশোর গ্যাং নামে গজিয়ে ওঠা এই সামাজিক বিষফোড়ার ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। অন্যথায় রাজধানীসহ সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে। দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে উঠতি বয়সি এসব অপরাধী।
পুলিশ বলছে, প্রায় প্রতিদিনই কিশোর গ্যাংয়ের নানা অপরাধের তথ্য ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আসছে। মাদকের বিস্তার, অর্থলোভ, আইনের তোয়াক্কা না করে নিজেকে বড় ভাবার প্রবণতা, বেকারত্ব, অভিভাবকদের দায়িত্বহীনতাসহ বেশ কয়েকটি কারণে বিপথগামী তরুণরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সজাগ রয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর অপরাধের ধরন অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিশোর অপরাধ কমাতে সামাজিক সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, এসব কিশোর-তরুণ পাড়া-মহল্লারই উঠতি বয়সি বখাটে ছেলে। আগে ওরা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারিসহ নানা ছোটখাটো অপরাধ কর্মকাণ্ডে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতিসহ রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ে অর্থের বিনিময়ে ভাড়াটে অপরাধী হিসেবেও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কাজ করছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরাও নিজেদের স্বার্থে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ওদের ব্যবহার করছে।
তল্লাশি, গ্রেপ্তার অভিযানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা পদক্ষেপেও কিশোর গ্যাং কালচার দমানো যাচ্ছে না। দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে গ্যাংয়ে জড়িত কিশোররা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দেশে ২৩৭টির মতো কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকায় ১২৭টি। সরকার পরিবর্তনের আগে ঢাকায় এসব গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৮২। বর্তমানে ঢাকার প্রতিটি থানা এলাকায়ই ৫০০ থেকে ১ হাজার সদস্য রয়েছে। চট্টগ্রামে ৫৭টি গ্রুপে ৩১৬ সদস্য রয়েছে। পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বিভিন্ন অপরাধে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে ৭৮০টি মামলা হয়। প্রতিটি মামলায় এসব অপরাধীকে আসামি করা হয়।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম কিশোর গ্যাংয়ের নতুন তালিকা করে অভিযান চালাতে সারা দেশে পুলিশের সব ইউনিটপ্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সদর দপ্তরে গত পাঁচ মাসে দফায় দফায় বৈঠক করে তাদের নিয়ন্ত্রণের পথ খোঁজা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারদের এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সদর দপ্তর সূত্র বলছে, ডিএমপির প্রতিটি থানা এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্য রয়েছে। ঢাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ৪০ শতাংশই কিশোর। আগের চেয়ে তাদের দলে সদস্য সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজারের বেশি হয়েছে। তাদের হাতে দেশীয় ধারালো অস্ত্রের পাশাপাশি পিস্তলের মতো আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী, মিরপুর ও আদাবর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেশি। এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে।
আদাবরে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতার বিষয়টি স্বীকার করে ওসি এসএম জাকারিয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার থানা এলাকায় আগে প্রতিদিন দুই-তিনটি কিশোর গ্যাং-সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া যেত। অপরাধের ধরন অনুযায়ী সেগুলোর প্রতিকার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ তৎপরতা কমাতে প্রায়ই যৌথ বাহিনীর অভিযান চালানো হচ্ছে। গ্রেপ্তারও করা হয়েছে অনেককে। একই সঙ্গে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে থানার বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’
পল্লবী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার থানা এলাকায় একসময় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা খুব বেশি ছিল। তবে বর্তমানে অনেক কমেছে। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তালিকাভুক্ত কিশোর গ্যাং লিডার জাহিদ ও আশিকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায়ই অভিযান চালানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার থানা এলাকায় ১০টি বস্তি ও ৩৯টি বিহারি ক্যাম্প রয়েছে। এসব ক্যাম্পে প্রায়ই জনসাধারণকে নিয়ে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। বৈঠকে কিশোর গ্যাং অপরাধের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে।’
মিরপুর থানার ওসি সাজ্জাদ রহমান বলেন, ‘এই থানা এলাকায় কিশোর গ্যাং-সংক্রান্ত অপরাধ তুলনামূলক কম। এরপরও আমরা বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনসাধারণের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছি। এসব বৈঠকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাও থাকছেন। বৈঠকে অভিভাবকদের সন্তানদের বিষয়ে অধিক সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এ ছাড়া কিশোর অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযানের সময় সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাও থাকছেন। তার উপস্থিতিতেই কিশোর অপরাধীকে ধরার পর সংশোধান কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেসব শিশু-কিশোর বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে, শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। পারিবারিক, সামাজিক, সাংগঠনিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই শিশু-কিশোরদের অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘কিশোর অপরাধের তৎপরতার বিষয়ে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেসঙ্গে এটি নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণকে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় পুলিশ বাহিনীর একার পক্ষে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়ে উঠবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি জুলাই-আগস্টে সরকার পতনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তেমন একটা মাঠে না থাকায় কিশোর অপরাধ কয়েকগুণ বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে শিশু-কিশোররা সাইবার অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে। ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকÑ এসব প্লাটফর্মে কোনো একটি চরিত্র দেখে অনেক শিশু-কিশোর নিজের বাস্তবজীবনেও সেগুলোর প্রতিফলন ঘটাতে চায়। সেক্ষেত্রে যখন নিজের মতো আরও অনেককে পেয়ে যায়, তখন তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তেমনটাই করছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। তারা দল বেঁধে বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, এসব কিশোরকে সঠিক পথে ফেরাতে কাজ করতে হবে পারিবারিক, সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় সব জায়গা থেকে। যারা নিজেদের স্বার্থে কিশোরদের ব্যবহার করে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এসব কিশোর গ্যাং কালচার প্রতিরোধে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সামাজিকভাবে সবাই মিলে একটি গাইডলাইন তৈরি হলে এটি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।