Image description

গত ২৫ ডিসেম্বর বারাণসীর দশাশ্বমেধ ঘাটে ভ্রমণের সময় একদল হিন্দুত্ববাদী পুণ্যার্থীর হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন কয়েকজন জাপানি পর্যটক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিতর্ককে পরবর্তীতে পুলিশ একটি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই পর্যটকরা ঘাটে গোসল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় কিছু পুণ্যার্থী তাঁদের বাধা দেন এবং গঙ্গা নদীতে প্রস্রাব করার অভিযোগ তোলেন। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে পুণ্যার্থীরা পর্যটকদের জেরা করছেন এবং পর্যটকরা দৃশ্যত ভীত ও বিভ্রান্ত অবস্থায় রয়েছেন।

ভাইরাল ভিডিওতে এক পুণ্যার্থীকে বলতে শোনা যায়, “আপনার কি সাধারণ জ্ঞান নেই? এটি আমাদের পবিত্র নদী। এখানে কত মানুষ স্নান করছেন। হাত জোড় করে ক্ষমা চান।”

 

পর্যটককে তাঁর ট্যুর গাইডকেও ডাকতে বলা হয়। হুমকির মুখে পড়ে এক জাপানি পর্যটককে ঘাটের সিঁড়িতে বসে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়।

 

বড়দিন উপলক্ষে পরিবারের সঙ্গে বারাণসী ভ্রমণে আসা ওই পর্যটকরা সাঁতারের পোশাক এবং সান্তা ক্লজের টুপি পরেছিলেন।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেশ কিছুক্ষণ ধরে বিতর্ক চলে এবং পর্যটকদের মৌখিকভাবে গালিগালাজ করা হয়, যার ফলে তাঁরা এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। ভিডিওতে পর্যটক পরিবারের নারী ও শিশুদেরও বেশ আতঙ্কিত দেখাচ্ছিল।

 

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বারাণসী পুলিশ কাশি ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। পুলিশ জানায়, “স্নান করা নিয়ে জাপানি পর্যটকদের জেরা করেছিলেন অন্য তীর্থযাত্রীরা। পর্যটকরা ক্ষমা চাওয়ার পর বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে মিটে গেছে। কোনো শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেনি।”

 

সহকারী পুলিশ কমিশনার অতুল অঞ্জন ত্রিপাঠি বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানান, “কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি হলেও পরে দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে কথা বলে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেন।” তিনি আরও জানান, কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেনি, তবে পুলিশ ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল তা খতিয়ে দেখছে।

 

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেক ব্যবহারকারী পুণ্যার্থীদের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়ে একে বিদেশি পর্যটকদের প্রতি অসম্মানজনক বলে অভিহিত করেছেন। অনেকের মতে, এই ঘটনা আতিথেয়তার পরিপন্থী এবং এটি বারাণসী তথা ভারতের পর্যটন শিল্পের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে।