Image description
 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পদক্ষেপে বিশ্ব তেলের বাজারে আবারও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ভেনেজুয়েলায় ঢোকা ও সেখান থেকে বিভিন্ন দেশে যাওয়া সমস্ত তেলবাহী ট্যাঙ্কার সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। এরপরই তেলবাজারে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে যায়।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। 

এদিন গ্রিনিচ মান সময় ১০টা ১৮ মিনিটে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৬০ দশমিক ৩৩ ডলার, যা ১ ডলার ৪১ সেন্ট বা ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫৬ দশমিক ৬৯ ডলার, যা ১ ডলার ৪২ সেন্ট বা ২ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

এর আগে রাশিয়া–ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির কারণে বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির প্রত্যাশা তৈরি হয়। এতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দেয় এবং সরবরাহ বাড়ার আশায় দামের ওপর চাপ পড়ে। পাশাপাশি বৈশ্বিক চাহিদা দুর্বল থাকার উদ্বেগও বাজারে তেলের মূল্য নিচে নামিয়ে আনে। গত অর্থ বছরে তেলের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে স্থির হয়েছিল।

এদিকে মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সব তেলবাহী ট্যাঙ্কারের ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ ও প্রস্থান নিষিদ্ধের নির্দেশ দেন ট্রাম্প এবং জানান যে, তিনি এখন ভেনেজুয়েলার শাসকদের ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে বিবেচনা করছেন।

আইএনজি বিশ্লেষক ওয়্যারেন প্যাটারসন বলেন, রাশিয়াজনিত ঝুঁকি নিয়ে বাজারে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। তবে ভেনেজুয়েলার তেল সরবরাহ নিয়েও স্পষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।

এই মন্তব্য আসে এমন সময়ে যখন এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে একটি নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ট্যাঙ্কার জব্দ করে। তবে, রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিষ্কার নয় কত সংখ্যক ট্যাঙ্কার এই অবরোধের আওতাভুক্ত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এই অবরোধ কার্যকর করবে। ট্রাম্প উপকূলরক্ষী বাহিনীকে ব্যবহার করতে পারেন কিনা, সে নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। যদিও, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে।

ভেনেজুয়েলায় যেসব জাহাজ তেল তুলছে, তাদের মধ্যে অনেকেই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলেও কিছু ট্যাঙ্কার রয়েছে যারা ভেনেজুয়েলার তেল ইরান ও রাশিয়া থেকে বহন করছে, কিন্তু নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত নয়। এমনকি শেভরন কর্তৃক চার্টার করা ট্যাঙ্কারও ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাচ্ছে, যা পূর্বে ওয়াশিংটনের অনুমোদনপ্রাপ্ত।

কেপলারের সিনিয়র অয়েল অ্যানালিস্ট মুয়ু জু বলেন, ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদন বৈশ্বিক উৎপাদনের প্রায় ১ শতাংশ। তবে সরবরাহ সীমিত সংখ্যক ক্রেতার মধ্যে কেন্দ্রীভূত। চীন ভেনেজুয়েলান তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা, যা দেশটির মোট তেল আমদানির প্রায় ৪ শতাংশ।

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রে তেলের মজুত কমে যাওয়ার কারণেও বাজারে বড় প্রভাব পড়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির অপরিশোধিত তেল মজুত ৯ দশমিক ৩ মিলিয়ন ব্যারেল কমেছে বলে জানা গেছে। সূত্র: রয়টার্স