বিশ্বজুড়ে মানবিক সংকট মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমান অবহেলা ও সহায়তা কমে যাওয়ার সমালোচনা জানিয়ে জাতিসংঘ প্রকাশ করেছে এর ২০২৬ সালের মানবিক সহায়তার প্রাথমিক পরিকল্পনা। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত পরিকল্পনাটি গভীর অর্থসংকট ও বহুমুখী সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় আগের তুলনায় ছোট আকারে করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক শাখার প্রধান টম ফ্লেচার বলেন, বিশ্ব আজ নিষ্ঠুরতা, দায়মুক্তি ও ভয়াবহ উদাসীনতার সময় পার করছে। তিনি জানান, ২০২৫ সালে মাঠপর্যায়ে যে পরিমাণ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, যৌন সহিংসতা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ড তিনি দেখেছেন, তা তাকে হতবাক করেছে।
জাতিসংঘ ২০২৬ সালের জন্য অন্তত ২৩ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে চায়, যা গাজা, ইউক্রেন, সুদান, হাইতি ও মিয়ানমারসহ সবচেয়ে বিপর্যস্ত ৮৭ মিলিয়ন মানুষের জন্য ব্যয় হবে। পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ৩৩ বিলিয়ন ডলার—তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা বড় ধরনের কমে যাওয়ায় লক্ষ্য অর্জন কঠিন বলে মনে করছে জাতিসংঘ।
২০২৫ সালে জাতিসংঘের ৪৫ বিলিয়ন ডলারের আহ্বানের বিপরীতে মাত্র ১২ বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে—দশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এতে আগের বছরের তুলনায় ২৫ মিলিয়ন কম, মোট ৯৮ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়েছে।
জাতিসংঘ জানায়, যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক দাতা হলেও ২০২৫ সালে তাদের অনুদান নেমে এসেছে ২.৭ বিলিয়ন ডলারে—যা ২০২৪ সালের ১১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় বড় পতন।
ফ্লেচার বলেন, 'বিশ্ব প্রতিরক্ষা খাতে যত অর্থ ব্যয় করছে, তার মাত্র এক শতাংশের একটু বেশি আমরা চাই। এটি ব্রুকলিনের হাসপাতাল আর কন্দহারের হাসপাতালের মধ্যে পছন্দ করার বিষয় নয়—বরং বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা ব্যয় সামান্য কমিয়ে মানবিক সহায়তা বাড়ানোর প্রয়োজন।'