হোয়াইট হাউস থেকে গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশ করা হয়েছে। ৩৩ পৃষ্ঠার এই নথিতে তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং ইউরোপকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির নতুন অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। কৌশলটিকে ইউরোপবিরোধী এবং আক্রমণাত্মক ভাষায় তৈরি করা হয়েছে বলে সমালোচনা উঠেছে।
সোমবার সিএনএন জানিয়েছে, ওই নথিতে ইউরোপীয় নেতাদের সমালোচনা করা হয়েছে এবং অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ পরিস্থিতি শেষ করার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছেন। পূর্ববর্তী প্রশাসনগুলোর মতো রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে নয় বরং ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়াকে ‘অস্তিত্বগত ঝুঁকি’ মনে করে—এই বক্তব্য রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপের স্থিতিশীলতা এবং রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত ভারসাম্য পুনর্গঠনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই কৌশলকে স্বাগত জানান এবং ট্রাম্পকে ‘শক্তিশালী নেতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
দলিল প্রকাশের পর ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কিকে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি ধীর এবং জেলেনস্কি এখনো মার্কিন পক্ষের তৈরি করা শান্তি প্রস্তাব পুরোটা পড়েননি। ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়া এই প্রস্তাবে ইতিবাচক হলেও জেলেনস্কি এতে সন্তুষ্ট নন।
এদিকে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার অংশ হিসেবে সোমবার লন্ডনে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন জেলেনস্কি। সম্প্রতি মিয়ামিতে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন আলোচনায় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, সীমান্ত ও ভূখণ্ড সংক্রান্ত ইস্যুতে সমাধান না আসায় এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধরা হচ্ছে।
ইউক্রেনের অবস্থান স্পষ্ট—তারা রাশিয়ার কাছে কোনো ভূখণ্ড ছাড়বে না এবং যুদ্ধ শেষে দেশটি স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়। অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল দখলে নিতে তিনি যে কোনো পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত।
লন্ডনে জেলেনস্কির বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস। মাখোঁ জানিয়েছেন, তাঁরা মার্কিন মধ্যস্থতায় চলমান আলোচনার বর্তমান পরিস্থিতি ও অগ্রগতির মূল্যায়ন করবেন।