Image description
 
 

১৮ বছরের সকল নাগরিকদের সামরিক যোগ্যতার জরিপে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূক করতে যাচ্ছে জার্মানি। নতুন ব্যবস্থায় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সামরিক সেবা চালু করা হবে। জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বোরিস পিস্তোরিয়াস বলেন, আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে নতুন স্বেচ্ছাশ্রম ভিত্তিক সামরিক সেবা কার্যক্রম শুরু হবে। এতে আগ্রহীদের জন্য বেতন ও সুবিধা যৌক্তিকভাবে বাড়ানো হবে। নতুন নিয়মের আওতায় স্বেচ্ছাসেবীরা প্রতি মাসে ২ হাজার ৬০০ ইউরো বেতন পাবেন। বাংলাদেশী টাকায় যেটির পরিমাণ সাড়ে ৬ লাখ টাকারও বেশি।

 

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আশা করেন, এই প্রশিক্ষণের জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা ২০২৬ সালের মধ্যে ২০ হাজারে পৌঁছাবে। খবর ডয়েচে ভেলের। নতুন নিয়ম অনুযায়ী ২০২৬ সাল থেকে ১৮ বছর বয়সী সকল পুরুষকে একটি সম্মিলিত প্রশ্নপত্র পূরণ করতে হবে। এতে প্রত্যেককে শারীরিক সক্ষমতা ও সামরিক সেবাদানের ইচ্ছার তথ্য জানতে চাওয়া হবে। নারীরা চাইলে এই উদ্যোগে স্বেচ্ছায় অংশ নিতে পারবেন, তবে তাদের ক্ষেত্রে এটি বাধ্যতামূলক নয়। ২০২৭ সালের জুলাই থেকে স্বেচ্ছাসেবী সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য শারীরিক পরীক্ষা চালু করা হবে, যা বছরে প্রায় ৩ লাখ যুবককে অন্তর্ভুক্ত করবে।

বর্তমানে জার্মান সেনাবাহিনী-বুন্দেসওয়ার, প্রায় ১ লাখ ৮২ হাজার সেনা নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে ন্যাটোর চাহিদা অনুযায়ী ২০৩৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটিকে ২ লাখ ৬০ হাজারে উন্নিত করেতে চাচ্ছে দেশটি। ন্যাটোর চাহিদার ভিত্তিতেই এটি হওয়া প্রয়োজন। তবে স্বেচ্ছাসেবী পর্যাপ্ত হবে কি না তা নিয়ে দেশটিতে রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। সংরক্ষণপন্থি রাজনৈতিক দল সিডিইউ বলছে, পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী না পাওয়া গেলে দেশটিতে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা পুনরায় চালু করা হবে। এদিকে সামাজিক গণতান্ত্রিক দল পুনরায় বাধ্যতামূলক সেবা চালু করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। বরং এর পরিবর্তে তারা চূড়ান্ত সমঝোতার ভিত্তিতে স্বেচ্ছাশ্রম চালু রাখার পক্ষে।

 

তবে স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা যদি কাক্সিক্ষত সংখ্যক না হয়, তবে বুন্দেসওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে কতজনকে চাহিদার ভিত্তিতে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিস্তোরিয়াস বলেন, নতুন ক্যারিয়ার সেন্টার পুরনো ধাঁচের সেবাকেন্দ্রের মতো হবে না। বরং এটি আরও বেশি উজ্জ্বল হবে যা, যুবকদের জন্য অকর্ষণীয় পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তবে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশটির যুব সমাজের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

 

অন্যদিকে বিরোধী দলগুলোও এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। স্কুল ছাত্র প্রতিনিধি কুয়েন্টিন গার্টনার বলেন, সরকার তাদের পুরোপুরি দায়িত্ব নেওয়ার কোনো সংকেত দিচ্ছে না। জার্মানির এই পদক্ষেপ ইউরোপের নর্ডিক দেশগুলোর অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করেই নেওয়া হয়েছে, যেখানে স্বেচ্ছাশ্রমকে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে।