Image description

ইসরায়েলের সেনাপ্রধান হারজি হালেভি ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৪ সালের ৬ মার্চ তিনি পদত্যাগ করবেন। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) তিনি এই ঘোষণা দেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলায় বড় ধরনের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

হালেভি জানিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের জন্য বাহিনীর প্রস্তুতি জোরদার করবেন। তবে তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

৭ অক্টোবরের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করার ঘটনায় জনরোষ তীব্র হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় তদন্ত শুরু করতে বারবার আপত্তি জানিয়েছে।

পদত্যাগপত্রে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজকে হালেভি লিখেছেন, ৭ অক্টোবর সকালে, আইডিএফ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল। এই ব্যর্থতার কারণে ইসরায়েলকে মূল্য দিতে হয়েছে।

চার দশকের সামরিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হালেভি তার ব্যর্থতার দায় ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করে বলেন, এই ভয়াবহ ব্যর্থতার দায় আমাকে সারা জীবন বহন করতে হবে।

 

ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান মেজর-জেনারেল ইয়ারন ফিনকেলম্যানও তার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধের পর, হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি রবিবার কার্যকর হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে তিন জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং ছয় সপ্তাহে মোট ৩৩ জন জিম্মির মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। গাজায় এখনও প্রায় ৯৪ জন জিম্মি অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হালেভিকে তার অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে, পরবর্তী সেনাপ্রধান নিয়োগের আগ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। নেতানিয়াহুও হালেভির পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন।

গাজা যুদ্ধের সময় হালেভির আচরণ নিয়ে নেতানিয়াহুর সরকারের কট্টরপন্থিরা সমালোচনা করেছেন। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ তার গাজা যুদ্ধনীতি ‘কোমল’ বলে উল্লেখ করেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর ২০২৩ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং গাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।

হালেভি উল্লেখ করেছেন যে, ৭ অক্টোবরের ব্যর্থতা সত্ত্বেও, ইসরায়েল সামরিকভাবে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি হামাসকে দুর্বল করা, লেবাননে হিজবুল্লাহর শক্তি ধ্বংস, ইরানকে দুর্বল করা এবং সিরিয়ার সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেছেন, ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান চলছে।