তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও ইস্তান্বুলের মেয়র একরেম ইমামওলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১৪২টি অভিযোগ এনেছে দেশটির প্রধান প্রসিকিউটর। এসব অভিযোগে তার সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত আদালতের নথিতে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই ও বিবিসি।
প্রায় চার হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ইমামওলুর বিরুদ্ধে ঘুষ, অর্থ আত্মসাৎ, মানি লন্ডারিং, চাঁদাবাজি, দরপত্র জালিয়াতি এবং অপরাধী চক্র পরিচালনাসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসিকিউশন বলছে, তিনি ‘এক অক্টোপাসের মতো’ তুরস্কজুড়ে বিস্তৃত একটি অপরাধ নেটওয়ার্ক পরিচালনা করেছেন।
ইস্তান্বুলের প্রধান প্রসিকিউটর আকিন গুরলেক জানিয়েছেন, এই মামলায় ইমামওলুসহ মোট ৪০১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০৫ জন ইতোমধ্যে আটক রয়েছেন। তদন্তে দেখা গেছে, অভিযুক্তরা ঘুষ নেওয়া, অর্থ পাচার ও অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে প্রায় ১৬০ বিলিয়ন তুর্কি লিরা (প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি করেছেন।
৫৪ বছর বয়সী ইমামওলুকে গত ১৯ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে ইস্তান্বুলের মারমারা কারাগারে প্রাক-বিচারিক আটক অবস্থায় আছেন। তার গ্রেপ্তারের পর তুরস্কজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। শত শত মানুষকে আটক করে পুলিশ দমন অভিযান চালায়।
ইমামওলু ও তার দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, এরদোয়ান সরকার রাজনৈতিক প্রতিশোধের অংশ হিসেবে এসব মামলা দায়ের করেছে, বিশেষত ২০২৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে একে পার্টির পরাজয়ের পর থেকেই সরকার বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
ইমামওলু ২০১৯ সালে প্রথমবার ইস্তান্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবারও ক্ষমতাসীন একে পার্টির প্রার্থীকে প্রায় দশ লাখ ভোটে পরাজিত করেন। তবে বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কারণে তার বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছে, যা আইন অনুযায়ী তাকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য করে তুলতে পারে।