এবার পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ও স্বয়ংক্রিয় সুপার টর্পেডো পোসেইডনের সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে রাশিয়া। বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন স্বয়ংক্রিয় এই সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছেন। পুতিন বলেছেন, রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন একটি স্বয়ংক্রিয় পোসেইডন সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা করেছে এবং এটি দুর্দান্ত এক সাফল্য। খবর আরটির।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার পোসেইডন সুপার টর্পেডো সম্পর্কে প্রকাশ্যে তেমন নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে এটি মূলত একটি স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক টর্পেডো যা তেজস্ক্রিয় সুনামি কিংবা সমুদ্র ঢেউ সৃষ্টি করে উপকূলীয় শহরগুলোকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধে আহত রুশ সেনাদের সঙ্গে মস্কোর একটি হাসপাতালে চা পান করার সময় পুতিন বলেন, স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক এই টর্পেডোর পরীক্ষা মঙ্গলবার চালানো হয়ছে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো আমরা শুধু বাহক সাবমেরিন থেকে এটি উৎক্ষেপণ করতেই সক্ষম হইনি, বরং এর পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ইউনিটও সক্রিয় করতে পেরেছি; যা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
পৃথিবীতে আমাদের এই অস্ত্রের মতো আর কোনো অস্ত্র নেই। পুতিন বলেন, এটি বিশাল এক সাফল্য। পোসেইডনের শক্তি আমাদের সারমাত আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের (যা এসএস-এক্স-২৯ বা স্যাটান টু নামে পরিচিত) চেয়েও বেশি। পোসেইডনের ক্ষমতা এমনকি আমাদের সবচেয়ে উন্নত সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তিকেও অনেকাংশে ছাড়িয়ে গেছে। এর এক সপ্তাহ আগে পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বুরেভেস্তনিকের সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেন ভøাদিমির পুতিন। বিশ্বের যে কোনো ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। দেশটি এখন এই অস্ত্র মোতায়েনের দিকে অগ্রসর হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে শিশুদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে রাশিয়া। সম্প্রতি ইউক্রেনের সীমান্তঘেঁষা রোস্তভ এলাকায় অনুষ্ঠিত রুট মার্চে অংশ নিয়েছে তারা। এতে অস্ত্র পরিচালনাসহ সামরিক বিভিন্ন কৌশল রপ্ত করছে তারা। ইউক্রেন যুদ্ধে আহত রুশ সেনাদের তত্ত্বাবধানে চলছে বিশেষ এই প্রশিক্ষণ। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের আত্মবিশ্বাসী আর দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভøাদিমির পুতিনের দেশ।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, রুশ সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে কঠোর প্রশিক্ষণে ঘাম ঝরাতে ব্যস্ত ছোট ছোট শিশুরা। দেশ রক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রমেও তাদের চোখেমুখে নেই ক্লান্তির ছাপ। কেউ সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা, আবার কেউ সাধারণ পোশাকে নিচ্ছে প্রশিক্ষণ। কারও হাতে খেলনা বন্দুক কেউবা সত্যিকারের রাইফেল হাতে শত্রু মোকাবিলার কৌশল রপ্ত করছে। বুকেপিঠে ভর দিয়ে নদীতীরের জল-কাদায় কঠোর প্রশিক্ষণে ব্যস্ত তারা। তাদের চোখেমুখে প্রকাশ পাচ্ছে দেশপ্রেম।
প্রশিক্ষণ নিতে আসা শিশুরা জানায়, তারা মোট তিন রাউন্ড দৌড়েছে। সব ঠিকই আছে আর মজাও হচ্ছে দারুণ। তারা ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীতে অংশ নিতে চায়। এ কারণেই এই প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছে। রাশিয়ান শিশুরা জানায়, তারা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজের দেশের সেবা করতে চায়। একই সুরে কথা বলেছেন অভিভাবকরাও। তারা জানান, সন্ধ্যাবেলায় বাচ্চারা একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তবুও পুরো ব্যাপারটা নিয়ে তারা ভীষণ খুশি।