দীর্ঘ ১৫ মাসের ইসরাইলি আগ্রাসনের পর অবশেষে গাজায় কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি। রোববার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টা এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে এদিন তিন নারী জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তাদেরকে স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মুক্তি দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
এদিকে হামাসের হাতে থাকা তিন বন্দির মুক্তির বিনিময়ে ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। যাদের মধ্যে ৬৯ জন নারী বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
এদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ বন্দি হলেন- মাহমুদ আলিয়াওয়াত নামে ১৫ বছরের এক কিশোরী।
মুক্তিপ্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছেন ৬২ বছর বয়সি খালিদা জাররার। যিনি পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন (PFLP)-এর একজন শীর্ষ নেতা।
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, তার বারবার গ্রেফতার হওয়াটা অসহিংস রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ইসরাইলের দমন নীতিরই অংশ।
এছাড়াও মুক্তি পেতে যাচ্ছেন ডালাল খাসিব নামে ৫৩ বছর বয়সি এক নারী। যিনি প্রয়াত হামাস নেতা সালেহ আরৌরির বোন। সালেহ আরৌরি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি এলাকায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হন।
মুক্তিপ্রাপ্তদের তালিকায় আরও রয়েছেন ৬৮ বছর বয়সি আবলা আবদেল রাসুল। তিনি PFLP নেতা আহমদ সাদাতের স্ত্রী। আহমদ সাদাতের বিরুদ্ধে ২০০১ সালে ইসরাইলের পর্যটনমন্ত্রী রেহাভাম জেয়েভির হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযোগ আনা হয় এবং তিনি ৩০ বছর ধরে সাজা খাটছেন।
এদিকে আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তি পাওয়া বন্দিদের তালিকায় অন্তত ১২ জন যুবক এবং নাবালক রয়েছেন। যাদের মধ্যে কিছু সংখ্যকের বয়স ১৯ বছরের কম।
আল জাজিরার সাংবাদিক নিদা ইব্রাহিম জানিয়েছেন, অনেক শিশু এবং নাবালক ইসরাইলি বাহিনীর প্রতি পাথর নিক্ষেপের অভিযোগে আটক হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা এখানে অপেক্ষাকৃত কম সাজাপ্রাপ্তদের কথা বলছি। বন্দিদের তালিকায় শত শত নাম উল্লেখ রয়েছে, যাদের অধিকাংশকেই প্রশাসনিক আদেশে আটক করা হয়েছে। আর এটি মূলত ইসরাইলি দমন নীতিরই একটি অপকৌশল। যা কোনো প্রকার আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই মানুষকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাগারে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। আর এই প্রশাসনিক আটকাদেশ বারবার নবায়ন করা হয়’।