আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাতের কারণে পাকিস্তানের প্রধান সীমান্ত ক্রসিংগুলো দিয়ে বাণিজ্য ও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে টমেটোর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এ নিয়ে ইসলামাবাদের বাসিন্দারা চিন্তিত।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর পাকিস্তান চলতি মাসের শুরুতে উত্তর-পশ্চিমের টরখাম এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের চমন সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দেয়।
সাধারণত পাকিস্তানে উৎপাদন কমে গেলে আফগানিস্তান থেকে এই দুটি সীমান্ত দিয়ে টমেটো এবং অন্যান্য দ্রুত পচনশীল পণ্য আমদানি করা হয়, যা দেশের ঘাটতি পূরণ করে। সীমান্ত বন্ধ থাকায় সম্প্রতি টমেটোর দাম ৪০০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে। পাকিস্তানজুড়ে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৬০০ পাকিস্তানি রুপি (বাংলাদেশি প্রায় ২৬০ টাকা) পর্যন্ত পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
ইসলামাবাদের জি-৯ সবজি বাজারের ক্রেতা শান মসিহ আরব নিউজকে বলেন, ‘এগুলো খুব দামি হয়ে গেছে। আমরা এর কোনো কারণ বুঝতে পারছি না।’ তিনি যোগ করেন, ‘যেহেতু যেকোনো রান্নায় টমেটো ব্যবহার করা হয়, তাই আমরা সমস্যায় পড়েছি।’
ইসলামাবাদের ফল ও সবজি বাজারের বিক্রেতা মোহাম্মদ ইমরান কীভাবে সরবরাহে টান পড়েছে, তা নিয়ে কথা বলছিলেন। তিনি বলেন, সীমান্ত বন্ধ থাকায় আফগানিস্তান থেকে সরবরাহ বন্ধ।
ইমরান আরও বলেন, এখন ইরান, সিন্ধু ও কোয়েটা থেকে টমেটো আসছে। মানুষের চাহিদা কমেনি, এখনো ক্রেতারা একই পরিমাণ কিনছেন। কিন্তু তুলনামূলক সরবরাহ অনেকটা কমে গেছে।’ ইমরান আরও বলেন, এক সপ্তাহ আগেও টমেটো প্রতি কেজি ৫৬০ পাকিস্তানি রুপিতে বিক্রি হয়েছিল।
আরেক ক্রেতা নুসরাত জেহান বলেন, তিনি ১ কেজি টমেটো ৪০০ রুপি দিয়ে কিনেছেন। কয়েক দিন আগেও তিনি অনেক কম দামে টমেটো কিনেছেন। তিনি বলেন, আগে দাম কিছুটা কম ছিল, তবে সীমান্ত বন্ধের কারণে মনে হচ্ছে দাম এতটা বেড়েছে।
সবজির পাইকারি বিক্রেতা শাপুর খান বলেন, সীমান্ত বন্ধ হওয়ার পর টমেটোর সরবরাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তিনি আরব নিউজকে বলেন, পাকিস্তানে টমেটো কম। এমনকি ইরান থেকে যে টমেটো আসছে, সেটাও পরিমাণে কম।
এই ব্যবসায়ী বলেন, পাকিস্তান আফগানিস্তান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮০ থেকে ১২০ ট্রাক টমেটো আমদানি করত।
শাপুর খান বলেন, ‘এখন আমরা ইরান থেকে ১০ থেকে ১৫ ট্রাক এবং বাকিটা সোয়াত (পাকিস্তানের একটা অঞ্চল) থেকে পাচ্ছি, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।’
কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। আশা করছে, শিগগিরই দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ইসলামাবাদের মার্কেট কমিটির চেয়ারম্যান সাজিদ আব্বাসি বলেছেন, কর্তৃপক্ষ টমেটোর দামের আকস্মিক বৃদ্ধি সম্পর্কে জানে। তারা সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আব্বাসি বলেন, ‘সীমান্ত বন্ধের কারণে দামের এই তারতম্য সম্পর্কে আমরা জানি। বিকল্প সরবরাহ রুট শক্তিশালী করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’