Image description
 

লন্ডনের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে কফি পান করছিলেন এক নারী। হঠাৎ, কাপ থেকে কিছু কফি তিনি রাস্তার পাশের ড্রেনে ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটে গেল এক নাটকীয় ঘটনা! দ্রুতবেগে ওই নারীকে ঘিরে ধরলেন তিনজন এনফোর্সমেন্ট অফিসার; আর তার হাতে ধরিয়ে দিলেন ১৫০ পাউন্ডের জরিমানার একটি টিকিট।

এ ঘটনায় রীতিমতো 'হতবাক' ওই নারীসহ প্রত্যক্ষদর্শী সবাই। সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম লন্ডনের রিচমন্ড স্টেশন এলাকায়।

 

যে আইনে জরিমানা
বুরচু ইয়েসিলিয়ার্ট নামে ওই নারীকে মূলত এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন অ্যাক্ট ১৯৯০-এর ৩৩ নম্বর ধারায় জরিমানা করা হয়েছিল। তবে, ওই নারীর দাবি, ড্রেনে কফি ফেলায় জরিমানা গুনতে হবে, এমনটা তিনি ভাবতেই পারেননি। তাঁর মতে, তিনি বরং একজন দায়িত্বশীল নাগরিকের মতোই কাজ করছিলেন। কাজে যাওয়ার বাস এসে পড়ায়, কাপের তলানিটুকু বাসের মধ্যে পড়ে যাওয়ার ভয়ে তিনি হাতের কফিটুকু ড্রেনে ফেলে দেন।

 

ইয়েসিলিয়ার্ট বলেন, "আমি দেখলাম বাস চলে আসছে, তাই কাপের সামান্য বাকি অংশটুকু ঢেলে দিই। খুব বেশি কফি ছিল না, একদমই অল্প ছিল। কিন্তু, ঘুরতেই দেখি তিনজন অফিসার আমার দিকে তেড়ে আসছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে আমাকে থামালেন।"

তিনি জানান, তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন, বাসের কোনো সমস্যা নিয়ে কথা বলতে এসেছেন তারা। রাস্তার ড্রেনে তরল ফেলা যে বেআইনি, তা তাঁর ধারণার বাইরে ছিল। "পুরো ঘটনাটা আমার জন্য বড় এক ধাক্কা ছিল। আমি অফিসারদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এই আইন সম্পর্কে সতর্ক করে কোনো সাইনবোর্ড বা তথ্য দেওয়া আছে কি না। কিন্তু, তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।"

ইয়েসিলিয়ার্ট আরও বলেন, "এই অভিজ্ঞতা আমাকে এতটাই নাড়িয়ে দিয়েছিল যে কাজে যাওয়ার সময় আমি রীতিমতো কাঁপছিলাম। অফিসারদের আচরণ ছিল খুবই ভীতিজনক। আমার সঙ্গে ভীষণ অন্যায় করা হয়েছে। এই জরিমানাটা মাত্রাতিরিক্ত এবং অযৌক্তিক।"

কাউন্সিলের বক্তব্য ও শাস্তি বাতিল
রিচমন্ড-আপন-টেমস কাউন্সিল অবশ্য শুরুতে জানিয়েছিল, তাদের কর্মকর্তারা পেশাগতভাবেই এবং নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং জরিমানাটি আইন মেনেই করা হয়েছে। রিচমন্ড কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেন, "আমরা সবসময় আমাদের নীতি ন্যায্যভাবে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি। আমরা রিচমন্ডের জলপথ রক্ষা করতে এবং আমাদের রাস্তাঘাট পরিষ্কার ও নিরাপদ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"

তবে, ব্যাপক সমালোচনার মুখে এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষ ইয়েসিলিয়ার্টের ওপর থেকে জরিমানার শাস্তিটি তুলে নিয়েছে। রিচমন্ড-আপন-থেমস কাউন্সিল এখন বলছে, তারা জরিমানা বাতিল করেছে; কারণ মিসেস ইয়েসিলিয়ার্টের আপিল সফল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কাউন্সিল আরও জানায়, ইয়েসিলিয়ার্টের আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি ছোট ছিল এবং তিনি এমন ঘটনা আর ঘটাবেন না বলে রাজি হয়েছেন।