
ফিলিস্তিনের গাজায় বিদেশি সেনা মোতায়েন ইস্যুতে ব্যাপক বিরোধে জড়িয়েছে ইসরায়েল ও মিসর। ফলে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের অগ্রগতি নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। চুক্তির পরবর্তী ধাপ বাস্তবায়নের রূপরেখা নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও মিসর—এমনটাই জানাচ্ছে ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কান নিউজ। মূলত, গাজা ইস্যুতে ভিন্ন তিন দেশের পরিকল্পনা এই মতবিরোধের জন্ম দিয়েছে।
শান্তি মিশনে মতবিরোধের মূল কারণ
গাজায় শান্তি মিশনে বিদেশি ফোর্স কখন প্রবেশ করবে, তা নিয়েই মূলত মতবিরোধ চলছে। গত সোমবার, ইসরায়েলে মিসরের গোয়েন্দা প্রধান হাসান রাশাদ, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, শিন বেত পরিচালক ডেভিড জিনি ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তার বৈঠকের পর এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে।
মিসরের দাবি: যত দ্রুত সম্ভব গাজায় বিদেশি সেনা মোতায়েন করতে চাইছে মিসর, যা দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনার অংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া হলো—দ্বিতীয় ধাপে দ্রুত অগ্রগতি হোক, তবে তা হতে হবে ধাপে ধাপে ও পরিকল্পিতভাবে।
ইসরায়েলের অবস্থান: ইসরায়েল শর্ত দিয়েছে, সকল জিম্মির মরদেহ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তারা কোনোভাবেই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে এগোতে রাজি নয়।
জিম্মিদের মরদেহ ফেরত ও তুর্কি আপত্তি
মার্কিন প্রস্তাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপেই হামাসের হাতে নিহত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফেরত পাঠানোর কথা। তবে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির দাবি, সরঞ্জামের অভাবে এসব মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ বিলম্ব হচ্ছে। ইসরায়েল এটিকে সময়ক্ষেপণের অজুহাত হিসেবে দেখছে।
এদিকে, গাজায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তাতে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মিসর, আজারবাইজান, কাতার, জর্ডান, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্ক। কিন্তু এই সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক বাহিনীর মধ্যে তুর্কি সেনাদের উপস্থিতি নিয়ে ঘোর বিরোধিতা করেছে তেলআবিব।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিলেও, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিতমূলকভাবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন: "তুরস্কের ভূমিকা নিয়ে আমার অবস্থান পরিষ্কার। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট যেমনটি বলেছেন, এ বিষয়ে আমার খুবই শক্ত মতামত আছে। আপনারা হয়তো বুঝতেই পারছেন, সেটি কী।"
প্রসঙ্গত, তিন দিনের সফরে ইসরায়েলে থাকা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানান, পরিস্থিতি অনিশ্চিত ও জটিল হওয়ায় হামাসের নিরস্ত্রীকরণের কোনো সময়সীমা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি এ-ও নিশ্চয়তা দেন যে গাজায় কোনো মার্কিন সেনার উপস্থিতি থাকবে না।