
সম্প্রতি বড় ধরনের এক লুটের কাণ্ড ঘটে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের অবস্থিত বিশ্বখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে। দুর্ধর্ষ এই ঘটনা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সমৃদ্ধ এই জাদুঘরের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে একেবারে নাড়িয়ে দিয়েছে।
চোরের দল এত দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ সেরেছে যে কারও কারও কাছে এটিকে হলিউডের কোনও সিনেমার গল্প মনে হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে নয়টার দিকে। তখন দর্শনার্থীদের জন্য ল্যুভর খোলা ছিল। চুরির পর মিউজিয়ামের এককোণায় একটি ট্রাক খুঁজে পায় ফরাসি পুলিশ। ওই ট্রাক থেকে একটি মই লাগানো ছিল মিউজিয়ামের দোতলার ব্যালকনিতে। ব্যালকনির জানালা ভেঙে চোরেরা ল্যুভরে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিউজিয়ামের অ্যাপোলো রুমে চুরির ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোঁর নিউনেজ। এই কক্ষে ফ্রান্সের রাজপরিবারের বিভিন্ন অলংকারের সংগ্রহ রয়েছে। রয়েছে ফরাসি সম্রাট চতুর্দশ লুইসের ব্যবহার করা মূল্যবান পাথরের তৈরি বিভিন্ন পাত্র। চুরি যাওয়া অলংকারগুলো ‘অমূল্য’ বলে উল্লেখ করেছেন ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
চুরির পর ল্যুভরের কাছে একটি অলংকার পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের সংস্কৃতিমন্ত্রী রাশিদা দাতি। দেশটির গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ওই অলংকার ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী উজিনির মুকুট। সেটিতে ১ হাজার ৩৫৪টি হীরা ও ৫৬টি পান্না রয়েছে। চুরির সময় ক্ষতি হয়েছে মুকুটটির। চুরি হওয়া আরেকটি অলংকারও খুঁজে পাওয়া গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোঁর নিউনেজের ধারণা, এই চুরির সঙ্গে তিন থেকে চারজন জড়িত ছিল। তিনি বলেন, মাত্র সাত মিনিটে চুরি শেষে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় চোরেরা। আশা করা হচ্ছে, এই চোরদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। আর চুরি হওয়া সব অলংকার ফিরিয়ে আনা হবে। তদন্তের স্বার্থে রোববার এক দিনের জন্য ল্যুভর বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাঁক্রো চুরির এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘যে ঐতিহ্যকে নিয়ে আমরা গর্বিত হই, এটি তার ওপর একটি আক্রমণ।’
অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ম্যাঁক্রো। তিনি বলেছেন, ‘এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্যারিস প্রসিকিউটর দপ্তরের নেতৃত্বে সব জায়গায় সবকিছুই করা হচ্ছে।’