Image description

যুদ্ধবিরতির পর বাড়িঘরে ফিরছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। তবে দুই বছর ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় গাজার উত্তরাঞ্চলের প্রায় পুরোটাই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ফিরে আসা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য অবিলম্বে তাঁবু এবং অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র বা ক্যারাভান সরবরাহে ইসরাইলকে অনুমতি দিতে হবে। খবর আল জাজিরার।

আবাসনের অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত বালকৃষ্ণান রাজাগোপাল বলেছেন, উত্তর গাজায় ইসরাইলি বাহিনী যে এলাকাগুলো থেকে সরে এসেছে, সেখানে মানুষ ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না।

শনিবার আল জাজিরাকে দেয়া তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যুদ্ধের মানসিক প্রভাব এবং আঘাত মারাত্মক। উত্তর গাজায় যখন বাস্তচ্যুত লোকজন ফিরে আসছেন, আমরা সেটাই দেখতে পাচ্ছি।’

দুই বছরের সংঘাত বন্ধে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে শুক্রবার ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এরপর থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরে ফিরে আসছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলের হামলায় গাজায় ৬৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি তাঁবু এবং অন্যান্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছেন।

রাজাগোপাল উল্লেখ করেছেন যে, এই বছরের গোড়ার দিকে হওয়া অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় তাঁবু এবং অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। তবে ইসরাইলের কঠোর অবরোধের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, ‘এটাই এখন মূল সমস্যা। এমনকি গাজার জনগণের জন্য তাৎক্ষণিক ত্রাণ এবং সাহায্য পৌঁছানোও সম্ভব নয়, যদি ইসরাইল সকল প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করে রাখে। প্রবেশপথ খুলে দেয়া অপরিহার্য।’

গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসযজ্ঞকে বর্ণনা করতে গিয়ে রাজাগোপাল ‘ডোমিসাইড’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এর অর্থ হলো গণহারে মানুষের বসতবাড়ি ধ্বংস করে তাদের বাস্তুচ্যুত করা।

তিনি বলেন, ‘ঘরবাড়ি ধ্বংস করা, লোকজনকে উচ্ছেদ করা এবং কোনো এলাকাটিকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা গণহত্যার অন্যতম প্রধান উপদান।’

তিনি আরো বলেন, পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াটি শেষ পর্যন্ত প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেগে যাবে।

১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনিদের জাতিগত নির্মূলের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটা যেন আরেকটি নাকবা।