
ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজফফরনগরে ১৩ বছর বয়সী এক মুসলিম বালককে হেফাজতে নিয়ে মারধর করার ফলে তার বাম চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য পুলিশের মুসলিমদের প্রতি সংবেদনহীন এবং বর্বর আচরণে তোলপাড় চলছে। এমনকি ঘটনাটি এখানেই থেমে থাকেনি, ওই নাবালক শিশুটিকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো থেকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। পরে মুসলিম ছেলেটির বাবা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন এবং একাধিক জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শিশুটির বাবার বরাত দিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, নবরাত্রির সময় কম চাহিদার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে বন্ধ থাকা পরিবারের মুরগির দোকানটি আবার খোলার বিষয়ে স্থানীয় মসজিদে একটি ঘোষণা করার পরেই তাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। জানা যায় যে, কম দামে মুরগি বিক্রি করার এই ঘোষণায় কিছু বাসিন্দা ক্ষুব্ধ হন এবং তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।
এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, নাবালকটিকে একটি পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরিবার দাবি করেছে, তাদের সন্তানের উপর বিভীষিকাময় নির্যাতন চালানো হয়েছে। শিশুটিকে গুরুতরভাবে আঘাত করে দৃষ্টিশক্তির স্থায়ী ক্ষতি করা হয়েছে।
পরিবারটি পুলিশ আউটপোস্টে পৌঁছালে তাদের সন্তানকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গারদের পেছনে আটক থাকতে দেখে। প্রথমে তাদের বলা হয়েছিল, এটি একটি ছোটখাটো বিষয় এবং ছেলেটিকে পরে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তারা যখন আউটপোস্টে ফিরে আসে, তখন তাকে আহত অবস্থায় দেখতে পায়। পাশবিক নির্যাতনে শিশুটি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
এদিকে, শিশুটি বাবাকে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ধারা ১৭৩ এর অধীনে জরিমানা করা হয়।
এনএইচআরসি, এনসিপিসিআর, মুজফফরনগরের পুলিশ সুপার এবং জেলা শিশু কল্যাণ কমিটির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং পরিবারটি অভিযোগ করেছে, তাদের সন্তানকে অপহরণ করে একটি আউটপোস্টে আটকে রেখে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। পাশাপাশি তারা আরও দাবি করেছে, তাদের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখতে জেলের হুমকি দেওয়া হয়েছে।