Image description

গোটা বিশ্বের নজর এখন গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায়। বিষয়টি নিয়ে স্ট্যাটাস নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক সাবিনা আহমেদ।  তিনি লিখেছেন, কেন আইডিএফ (ইসরায়েলি বাহিনী) আলমা কিংবা সিরিয়াস জাহাজে উঠে আক্রমণ করেনি? কেনো এখন পর্যন্ত ইসরায়েল শুধু ভয় দেখিয়ে চলে যায়। এর প্রধান কারণ তুর্কি নৌবাহিনী এসকর্ট এবং ড্রোনের উপস্থিতি। ইসরায়েল তুর্কি নৌবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে যেতে চায়নি। গ্রেটা থুনবার্গের মতো বিখ্যাত ব্যক্তি এই ফ্লটিলায় আছে। ইউএন এবং অনেক দেশ এদের এবারের ফ্লটিলায় আক্রমণ না করার সতর্কতা দিয়েছে। তাই, আন্তর্জাতিক ক্ষোভ এড়াতে আপাতত ইসরায়েল অপেক্ষা করছে এবং শুধু হুমকি মূলক কাজ করছে। গাজামুখী ফ্লোটিলার সর্বশেষ তথ্য নিয়ে তার দেওয়া স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-

ফ্লোটিলা এখন গাজা থেকে প্রায় ৯০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছে। তারা ইতিমধ্যে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, ১৫০ নটিক্যাল মাইলের লাইন পার হয়েছে, এবং আগের ফ্লোটিলাগুলোর ইন্টারসেপশন পয়েন্ট (যেমন ম্যাডলিনের ১১০ নটিক্যাল মাইল) পার হয়ে গেছে। তারা ধীরে ধীরে গাজার কাছে যাচ্ছে, সেই সাথে বাড়ছে ইসরায়েলের আক্রমণের ঝুঁকি।

ইসরায়েলের সাথে ডিপ্লোম্যাটিক আর ফিজিক্যাল সংঘর্ষ এড়াতে ইতালির ফ্রিগেট (আলপিনো) ১৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এসে এসকর্ট ছেড়ে চলে যায়। এরপর একই কারণ দেখিয়ে স্পেনের প্যাট্রোল ভেসেল (ফুরোর) ১২০ নটিক্যাল মাইলে এসে এসকর্ট করা থামিয়ে দেয়। এই দুই নেভি শিপ আগে ড্রোন আক্রমণের পর সাহায্য করেছিল, কিন্তু উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় তার প্রবেশ না করে ছেড়ে যায়। ফ্লোটিলা এটাকে "সাবোটাজ" বলে অভিহিত করেছে।কারণ এরপরই ইজরায়েলি যুদ্ধজাহাজ ফ্লোটিলার মূল বোট আলমাকে ঘিরে ফেলে।

গতকাল গাজার থেকে প্রায় ১১৮ নটিক্যাল মাইল দূরে আন্তর্জাতিক পানিতে, ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ ফ্লোটিলার দুটি নৌকা (আলমা আর সিরিয়াস) ঘিরে ফেলে। তারা আক্রমণাত্মকভাবে চক্কর দিয়ে ভয় দেখায় এবং সাইবার আক্রমণ বা যোগাযোগ জ্যামিং করে। এতে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে, কিন্তু কোনো বোর্ডিং বা রেইড হয়নি। ফ্লোটিলা তার জার্নি চালাতে থাকে।

গতকাল ইসরায়েলি সাইবার আক্রমণে আলমা আর সিরিয়াস জাহাজের ক্যামেরা, লাইভস্ট্রিম, যোগাযোগ যন্ত্র এবং নেভিগেশন সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও কোনো শারীরিক বিস্ফোরণ বা আঘাত হয়নি, কিন্তু ইলেকট্রনিক যুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। আগের ড্রোন আক্রমণে (গ্রিসের কাছে) কয়েকটা নৌকায় আগুন এবং রাসায়নিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, কিন্তু এবারেরটায় শুধু জ্যামিং। কেউ আহত হয়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে কেন আইডিএফ (ইসরায়েলি বাহিনী) আলমা কিংবা সিরিয়াস জাহাজে উঠে আক্রমণ করেনি? কেনো এখন পর্যন্ত ইসরায়েল শুধু ভয় দেখিয়ে চলে যায়। এর প্রধান কারণ তুর্কি নৌবাহিনী এসকর্ট এবং ড্রোনের উপস্থিতি। ইসরায়েল তুর্কি নৌবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে যেতে চায়নি। এছাড়া বিশ্বের দৃষ্টি এবং চাপ– ১০০০ মানুষ (মতান্তরে ৫০০+) , গ্রেটা থুনবার্গের মতো বিখ্যাত ব্যক্তি এই ফ্লটিলায় আছে। ইউএন এবং অনেক দেশ এদের এবারের ফ্লটিলায় আক্রমণ না করার সতর্কতা দিয়েছে। তাই, আন্তর্জাতিক ক্ষোভ এড়াতে আপাতত ইসরায়েল অপেক্ষা করছে এবং শুধু হুমকি মূলক কাজ করছে।

 

এখন পর্যন্ত তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ফ্লোটিলার উপর নজরে রাখছে এবং দরকার পড়লে সাহায্য করবে বলে সুমুদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত তুর্কি ফ্রিগেট এবং ড্রোন এসকর্ট করেছে (যেমন একটা নৌকা নষ্ট হলে উদ্ধার করেছে)। বর্তমানে তুর্কি ফ্রিগেট বা জাহাজ সরাসরি এসকর্ট করছে না, কিন্তু কাছাকাছি আছে এবং "দরকার পড়লে" সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আগে ড্রোন ফ্লোটিলার উপরে উড়ে নজরদারি করেছে, কিন্তু ফ্লোটিলার অ্যাকাউন্ট অনুসারে এখন "দেখা যাচ্ছে না"। তুর্কি সূত্র বলছে, দরকার পড়লে ড্রোন পাঠাবে।

এই মিশন চলছে, কিন্তু পরিস্থিতি টেনশনপূর্ণ। বিশ্বের সমর্থন এবং নজরদারি তাদের নিরাপত্তার চাবিকাঠি।