
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এইচ-বি১ ভিসার ফি প্রায় ২ হাজার ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার করার সিদ্ধান্তের ফলে এসব আবেদন স্পনসরকারী ভারতীয় সংস্থাগুলোর ওপর নাটকীয় নতুন খরচ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। একজন এইচ-১বি ভিসা কর্মীর মূল বেতন ৬০ হাজার ডলার। কিন্তু নিয়োগকর্তাদের খরচ এখন সর্বনিম্ন ১ লাখ ৬০ হাজার ডলারে উন্নীত হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানগুলো সম্ভবত কম বেতনে একই রকম দক্ষতা সম্পন্ন আমেরিকান কর্মী খুঁজে পাবে।
বহু বছর ধরে ভারতীয় আইটি কোম্পানিগুলো নিজেরাই সমস্ত সংস্থার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এইচ-১বি ভিসা স্পনসর করে ভারতীয় কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে এনেছে। ২০১৪ সালে সর্বাধিক এইচ-১বি ভিসাপ্রাপ্ত ১০টি কোম্পানির মধ্যে সাতটি ভারতীয় ছিল অথবা ভারতে শুরু হয়েছিল, কিন্তু ২০২৪ সালে এ সংখ্যাটি চারটিতে নেমে এসেছে।
এ বছরের শুরুতে জাপানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পর, ভারত আজ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) নিয়ে গর্ব করে, যার অবস্থান যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং জার্মানির পরেই। কিন্তু দেশটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রতি বছর তার কর্মীবাহিনীতে প্রবেশকারী তরুণদের সংখ্যার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, যার ফলে কর্মসংস্থানের ব্যবধান আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিল্লি-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন ভারতীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা অজয় শ্রীবাস্তব আল জাজিরাকে বলেছেন, নতুন ভিসা নীতির ফলে ভারতীয় পেশাদারদের আধিত্যেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত্রগুলো হবে মধ্য-স্তরের আইটি পরিষেবার চাকরি, সফ্টওয়্যার ডেভেলপার, প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং অর্থ ও স্বাস্থ্যসেবাতে সহায়তা।
নতুন মার্কিণ ভিসা নীতি সম্পর্কে ভারতের ১শ’ ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যদের নিয়ে গঠিত নর্থ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান স্টুডেন্টস-এর প্রতিষ্ঠাতা সুধাংশু কৌশিক আল জাজিরাকে বলেছেন যে, ‘তাদের মনে করিয়ে দেওয়া যে তারা তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। আর যেকোনো সময়, যেকোনো ইচ্ছায়, যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সম্ভাবনা অবিশ্বাস্যরকম কঠিন এবং যন্ত্রণাদায়কভাবে অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।’
জিটিআরআই-এর শ্রীবাস্তব বলেন, ভারতের প্রযুক্তি খাত কিছু প্রত্যাবর্তনকারী এইচ-১বি কর্মীকে গ্রহণ করতে পারে, যদি তারা ফিরে যেতে চান। কিন্তু তা সহজ হবে না। তিনি বলেন, যদিও ভারতের আইটি এবং পরিষেবা খাতে নিয়োগ বছরের পর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবুও ফারাকটি বাস্তব, যার মধ্যে রয়েছে চাকরির পদ হ্রাস থেকে শুরু করে এআই, ক্লাউড এবং তথ্য বিজ্ঞানে নতুন নতুন পদ খোলা পর্যন্ত। এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষিত প্রত্যাবর্তনকারীরা ভারতীয় মানদ-ের চেয়ে অনেক বেশি বেতন আশা করবেন। কিন্তু বাস্তবে, কৌশিক বলেন, ‘অনেক এইচ-১বি প্রার্থী ভারতের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন দেশকে দেখছেন।’