Image description

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং তার মিত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে নিউইয়র্কে যে বৈশ্বিক সম্মেলন হয়েছে, সেখানে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নীতির বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ফ্রান্স এবং সৌদি আরবের উদ্যোগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সম্মেলনে বয়কট করেছে।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মাহমুদ আব্বাসেরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ভিসা প্রদান না করায় তিনি যেতে পারেননি। তবে নিজ বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড করে তা সম্মেলনে পাঠিয়েছেন তিনি।

সম্মেলন উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে আব্বাস বলেন, “হামাস এবং তার মিত্রদের অবশ্যই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। আমরা চাই একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র— যেখানে সাধারণ নাগরিকদের কাছে কোনো অস্ত্র থাকবে না, পুরো রাষ্ট্র এক আইনের অধীনে চলবে এবং একটি বৈধ নিরাপত্তা বাহিনী থাকবে।”

গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটলে ফিলিস্তিনে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টারি নির্বাচনের আয়োজন করা হবে বলেও ভিডিওবার্তায় বলেছেন আব্বাস। তিনি বলেন, “যুদ্ধাবসান কিংবা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলে তিন মাসের মধ্যে আমরা একটি অন্তর্বর্তী সরকার এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করব। সেই সরকারের মূল দায়িত্ব থাকবে অন্তর্বর্তী সংবিধান মেনে ফিলিস্তিনে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টারি নির্বাচনের আয়োজন করা।”

প্রসঙ্গত, পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি সরকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) হিসেবে পরিচিত। পিএ মূলত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলোর জোট। এই জোটের সর্ববৃহৎ দল ফাতাহ। মাহমুদ আব্বাস পিএ-এর পাশাপাশি ফাতাহেরও প্রেসিডেন্ট।

গাজা উপত্যকায় এক সময় ফাতাহ ক্ষমতাসীন ছিল। ২০০৬ সালের নির্বাচনে সেখানে হামাস জয়ী হয়। তারপর ২০০৭ সাল শেষ হওয়ার আগেই ফাতাহকে উপত্যকা থেকে বিদায় করে হামাস। বস্তুত ২০০৬ সালের পর আর কোনো নির্বাচন হয়নি গাজায়।

ফলে, গত প্রায় ১৯ বছর ধরে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে যে অতর্কিত হামলা ঘটেছিল, তার মূল পরিকল্পনাকারী এবং নেতৃত্বের ভূমিকায়ও ছিল হামাস। নজিরবিহীন সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস ও প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধারা।

হামলার জবাব দিতে এবং আটক জিম্মিদের উদ্ধার করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী, যা পুরোপুরি শেষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার। গত প্রায় ২ বছরের অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৭০ হাজারের অধিক।

সূত্র : সিএনএন