Image description

গাজা উপত্যকায় আরও ৫৩ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১৬টি ভবনও। যার মধ্যে তিনটি আবাসিক ভবন রয়েছে। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলীয় নগর কেন্দ্র দখল এবং স্থানীয়দের বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আলজাজিরা

স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) গাজা উপত্যকায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়। এ ছাড়া পুষ্টিহীনতায় ভোগে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গাজায় ক্ষুধার অভাবে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২২ জনে।

গাজা শহরের দক্ষিণাঞ্চলের রেমালে ইসরায়েলি বাহিনী আল কাওথার টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করে। এর দুই ঘণ্টা পরই বোমা মেরে ভবনটি পুরোপুরিভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ক্রমাগত বোমা হামলার ফলে ওই এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে।

বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মারওয়ান আল সাফি বলেন, ‘জানি না আমরা কোথায় যাব। এই পরিস্থিতিতে একটা সমাধান দরকার। কারণ আমরা মারা যাচ্ছি।’

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক ভবনে ইসরায়েলি বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তার বলেছে, ফিলিস্তিনের নির্মূল করা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যে এ হামলা চালানো হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলার চালানোর নামে ইসরায়েল বাহিনী পরিকল্পিতভাবে স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর বোমা ফেলছে। এ ছাড়া আবাসিক ভবন, শহর ধ্বংস এবং একাধিক সংগঠনের সদরদপ্তরসহ আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাকারী সংস্থার অফিসও বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি এক্স পোস্টে বলেন, গত চার দিনে অন্তত ১০টি সংস্থার ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরায়েল। যার মধ্যে রয়েছে সাতটি স্কুল, দুটি ক্লিনিক এবং আবাসিক ভবন। গাজায় কোথায় কোনো নিরাপত্তা স্থান নেই এবং এখানে কেউ নিরাপদ নয়।

বোমা হামলার মধ্যে অনেক পরিবার আবারও পালিয়ে দক্ষিণের আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নিচ্ছে। যদিও ইসরায়েল এ অঞ্চলকে নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

আহমেদ আওয়াদ আলজাজিরাকে বলেন, ‘মর্টার শেলের আঘাতে শনিবার উত্তরাঞ্চলীয় গাজা থেকে পালিয়ে আল মাওয়াসিতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু মধ্য রাতে এখানে পৌঁছানোর পর পানি, টয়লেট কিছুই পাওয়া যায়নি। পরিবারকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে হয়েছে। পরিস্থিতি কল্পনার থেকেও ভয়াবহ।’

আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার একটি বড় পরিবার আছে, যার মধ্যে আমার সন্তান, মা এবং দাদি রয়েছে। আমাদের ওপর শুধু ক্ষেপণাস্ত্রই বর্ষণ হচ্ছে না, দুর্ভিক্ষও আমাদের গ্রাস করেছে। আমার পরিবার দুই বছর ধরে বাস্তুচ্যুতির সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে। আমরা আর গণহত্যা, যুদ্ধ বা ক্ষুধা সহ্য করতে পারছি না।