
কাতারের দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা তার কোনো সিনিয়র উপদেষ্টার সাথে পরামর্শ করেননি। তাই এটি কেবল ইসরাইলের জন্যই পরিণতি বয়ে আনবে না বরং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমেরিকার সুনামকেও প্রভাবিত করবে বলে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম অ্যাক্সিওস জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি হোয়াইট হাউসকে বলেছেন, এই বিশ্বাসঘাতক কাজের পরে তার দেশ ওয়াশিংটনের সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতা পর্যালোচনা করবে।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল থানি আরো বলেছেন, উপসাগরীয় নেতারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তা নিয়ে আলোচনা করছেন।
প্রতিবেদন অনুসারে, ১২ দিনের যুদ্ধের সময় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর কাতারে অবস্থিত মার্কিন আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে ইরান হামলা চালায়। সম্প্রতি কাতারের দোহায় হামাস প্রতিনিধিদলের আলোচনাস্থলে হামলা চালায় ইসরাইল।
ঘটনার পর আল থানি হোয়াইট হাউসের রাষ্ট্রদূত স্টিভ হুইটেকারকে সতর্ক করে বলেছেন, কাতার আমেরিকার সাথে তার নিরাপত্তা সহযোগিতা গভীরভাবে মূল্যায়ন করবে এবং প্রয়োজনে তার নিরাপত্তা প্রদানের জন্য ‘অন্যান্য অংশীদার খুঁজবে’।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুটি সূত্র অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর কাছে কাতারে আক্রমণ না করার গ্যারান্টি চেয়েছিলেন ট্রাম্প। অ্যাক্সিওসের মতে, দোহা ওয়াশিংটনকে সতর্ক করা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু এই অপরাধের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাননি এবং এমনকি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ট্রাম্পের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি আরো একটি আক্রমণ চালাতে পারেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কাতার ষষ্ঠ দেশ, যেখানে ইসরাইল হামলা করেছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে অ্যাক্সিওস আরও জানিয়েছে, কাতারে হামলা নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার ট্রাম্প নেতানিয়াহুর সাথে দুইবার ফোনে কথা বলেছেন। ফোনালাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীর সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং এই পদক্ষেপের দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা কী হবে তা নিয়ে ভাবছেন।
একজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, কাতারে যা ঘটছে তা তেল আবিব এবং ওয়াশিংটনের বিশ্বাসঘাতকতা বলে মনে করছে কাতার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্কিন কর্মকর্তাদের এমনটাই বলেছেন।
এদিকে, বুধবার এক ভিডিওতে নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস নেতারা কাতারে থাকলে তিনি আবারও আক্রমণ চালাতে দ্বিধা করবেন না।
কাতারে হামাসের ওপর ইসরাইলের আক্রমণের বিষয়ে নেতানিয়াহু আরও বলেন, ৯/১১-এর পরে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে আল-কায়েদাকে দমন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে পন্থা অবলম্বন করেছিল তিনিও তাই করবেন।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছে দোহা। কারণ পুরো উপসাগরীয় অঞ্চল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
শীর্ষনিউজ