
জার্মানির নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে আসন্ন স্থানীয় নির্বাচনকে ঘিরে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের আগে ইতিমধ্যেই মারা গেছেন ১৬ জন প্রার্থী।
আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর রাজ্যে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ভোটে জেলা, পৌরসভা ও সিটি কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচন ছাড়াও মেয়র ও জেলা প্রশাসক নির্বাচিত হবেন। এ অবস্থায় প্রার্থীদের একের পর এক মৃত্যু সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষত ডানপন্থি ‘আলটারনেটিভ ফর জার্মানি’ (AfD) দলের প্রার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায়।তবে রাজ্য নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই এবং এটিকে অস্বাভাবিক বলে মনে করা হচ্ছে না।
একের পর এক মৃত্যু, তবু অস্বাভাবিক নয় বলছে কর্তৃপক্ষ
সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রথমে চারজন AfD প্রার্থীর মৃত্যু সংবাদ আসে। এর কয়েক দিনের মধ্যেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতজন। দলের সহসভাপতি এলিস ভেইডেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছিলেন, “চারজন AfD প্রার্থী মারা গেছেন।”
প্রথম চারজন প্রার্থী ছিলেন বাদ লিপসস্প্রিঙ্গে, ব্লমবার্গ, রাইনবার্গ ও শ্ভের্তের প্রতিনিধিত্বকারী। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এসব মৃত্যুর পেছনে কোনো তৃতীয় পক্ষের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। একটি ঘটনায় আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হলেও সেখানে কোনো অপরাধের ইঙ্গিত মেলেনি। অন্য তিনজনের মৃত্যু ছিল সন্দেহজনক নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক মৃত্যু ও আত্মহত্যার তথ্য
২ সেপ্টেম্বর ঘোষিত মৃত্যুর ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে কিডনির ব্যর্থতায় এবং অন্যজন আত্মহত্যা করেছেন। ৩ সেপ্টেম্বর AfD-র রেমশাইড শাখা জানায়, ক্রেমেনহল এলাকার তাদের প্রার্থী, যিনি ৮০ বছর বয়সী ছিলেন, দীর্ঘ অসুস্থতার পর স্বাভাবিক কারণে মারা গেছেন।
AfD-র রাজ্য সহসভাপতি কেই গোতশাল্ক এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে বলেন, এসব মৃত্যু নিছকই কাকতালীয়, এর পেছনে অন্য কোনো ব্যাখ্যা খোঁজার কারণ নেই। তবে তিনি এটাও জানান, ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করা হবে, যদিও ষড়যন্ত্র তত্ত্বে না গিয়েই।
সবচেয়ে বড় রাজ্যের নির্বাচন সামনে
১৮ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যা নিয়ে নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া জার্মানির তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য। এখানে আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এত বিপুল প্রতিযোগিতার মাঝেই একে একে ১৬ প্রার্থীর মৃত্যু রহস্য তৈরি করলেও, সরকারি কর্তৃপক্ষ একে স্বাভাবিক বলেই ব্যাখ্যা দিচ্ছে।
যদিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক জল্পনা চলছে, এখন পর্যন্ত তদন্তে কোনো অস্বাভাবিকতার প্রমাণ মেলেনি। কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব মৃত্যু রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফল নয়, বরং প্রার্থীদের ব্যক্তিগত বা স্বাভাবিক কারণেই ঘটেছে। তবে ভোট ঘনিয়ে আসায় ঘটনাটি স্থানীয় নির্বাচনের পরিবেশে বাড়তি কৌতূহল ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।